শাহজামাল শাওন, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি :কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার পূর্ব ধনিরাম এলাকায় দুর্যোগ ও ত্রাণ বিভাগের অর্থায়নে নির্মিত ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মাণের মাত্র তিন মাসের মধ্যেই ভেঙে পড়ে। এরপর কেটে গেছে দীর্ঘ ছয় বছর, কিন্তু এখনো সেখানে নির্মিত হয়নি নতুন কোনো সেতু। ফলে স্থানীয়রা বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে ড্রামের ভেলাতেই পারাপার করছেন প্রতিদিন।
গ্রামের একমাত্র সংযোগ সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন দুই গ্রামের পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ। বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থী, কৃষক ও কর্মজীবী মানুষ প্রতিদিন ভোগছেন দুর্ভোগ।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে সেতুটি মেরামত বা নতুন করে নির্মাণ না হওয়ায় এখন একমাত্র ভরসা সেই অস্থায়ী ড্রামের ভেলা। এতে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ। কৃষি পণ্য পরিবহনেও পড়তে হচ্ছে চরম বিপাকে। দ্রুত নতুন একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তারা।
স্থানীয় গ্রামবাসী আবেদ আলী, মকবুল ও পনির উদ্দিন বলেন, “সেতুটি নির্মাণের তিন মাসের মধ্যেই ভেঙে পড়েছে, আজ ছয় বছর পার হলেও নতুন করে কিছু হয়নি। প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে ভেলায় পারাপার করতে হয়, অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটে। আমরা সরকারের কাছে দ্রুত একটি নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।”
শিক্ষার্থী জেসমিন, রুবেল ও নুরনাহার বলেন, “ড্রামের ভেলায় করে স্কুলে যাতায়াত করতে খুব ভয় লাগে। অনেক সময় ভেলা থেকে পড়ে যাই, বইপত্র ভিজে যায়। এখানে যদি একটি নতুন ব্রিজ হতো, তাহলে স্কুলে যাতায়াত অনেক সহজ হতো।”
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সিরাজউদ্দিন জানান, “ওই খালের ওপর দুর্যোগ ও ত্রাণ বিভাগের মাধ্যমে ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছিল। খালের দৈর্ঘ্য বেড়ে যাওয়ায় সেতুটি ভেঙে গেছে। বর্তমানে খালের প্রস্থ আরও বেড়ে যাওয়ায় সেখানে নতুন ব্রিজ নির্মাণ সম্ভব নয়।”
উপজেলা প্রকৌশলী মামুনুর রহমান বলেন, “যেহেতু আগের ব্রিজটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পে করা হয়েছিল, তাই আমাদের রাস্তাটির কোনো আইডি নেই। আইডি ছাড়া এলজিইডির মাধ্যমে নতুন সেতু নির্মাণ করা সম্ভব নয়।”
স্থানীয়দের দাবি, এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের ভোগান্তি লাঘবে প্রশাসনের দ্রুত উদ্যোগে সেখানে একটি নতুন স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হোক।
