এস.এম. রকি, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : প্রাণিসম্পদ খাতে যুক্ত হয়ে ভাগ্যবদল হয়েছে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার বহু খামারীর। বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন জাতের পশুপাখি লালন-পালন করে যেমন আয় করছেন তারা, তেমনি সৃষ্টি করেছেন নিজেদের কর্মসংস্থানও। সমাজে তাদের সম্মান ও গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
“দেশীয় জাত, আধুনিক প্রযুক্তি- প্রাণিসম্পদে হবে উন্নতি” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর এবং ভেটেরিনারি হাসপাতালের আয়োজনে বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে জাতীয় প্রাণীসম্পদ সপ্তাহ–২০২৫ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার খামারীরা ৬ ক্যাটাগরীতে মোট ৩০টি স্টলে অংশ নিয়ে নিজেদের সাফল্যের গল্প ও খামারি উদ্যোগ তুলে ধরেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামান সরকারের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) অয়ন ফারহান শামস, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রতন কুমার ঘোষ, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও খামারীগণ।
খামারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় - গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, গাড়ল, কোয়েল, কবুতরসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখির বাণিজ্যিক খামার এখন উপজেলার বহু মানুষের আয়ের প্রধান উৎস। এসব খামারের আয় শুধু তাদের পরিবারেই স্বচ্ছলতা এনে দেয়নি; স্থানীয় বহু যুবকের বেকারত্বও দূর হয়েছে।
উপজেলার সফল নারী খামারী রুনা লায়লা চৌধুরী জানান, প্রায় ১০ বছর আগে হলস্টেইন জাতের একটি গরু দিয়ে তার খামার যাত্রা শুরু। এখন তার খামারে দেশি–বিদেশি জাতের ১৭টি গাভী ও বাছুর রয়েছে। তিনি বলেন, “একজন নারী হিসেবে স্বামীকে সংসার পরিচালনায় সহযোগিতা করতে পারছি এটাই আমার সবচেয়ে বড় অর্জন।”
তিনি আরও জানান, বর্তমানে তার খামারের হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান জাতের গরু থেকে প্রতিদিন প্রায় ২৫ লিটার দুধ পাওয়া যায়। বাজারমূল্য অনুযায়ী প্রতি লিটার ৫৫ টাকা দরে দুধ বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে তরুণ উদ্যোক্তা সিয়াম ইসলাম জানান, মাত্র চার মাস আগে ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে ৫০০ কোয়েল পাখি দিয়ে শুরু করা তার খামারে এখন পাখির সংখ্যা তিন হাজার। ডিম ও কোয়েল বিক্রি করে গত দুই মাস ধরে প্রতি মাসে প্রায় ৩০ হাজার টাকা আয় করছেন তিনি। পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের কর্মসংস্থান হওয়ায় তিনি এখন আরও আত্মবিশ্বাসী। সময়ের সাথে খামার বৃদ্ধি করবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে ইউএনও কামরুজ্জামান সরকার বলেন, “ অল্প পুঁজিতেই প্রাণীসম্পদে খাতে ইতিবাচক সফলতা মিলছে। বর্তমান সময়ে শুধু চাকরির অপেক্ষায় না থেকে উদ্যোক্তা হওয়া এখন একটি গর্বের বিষয়। এমন উদ্যোগের জন্য শুভকামনা সবসময়। ”
অনুষ্ঠান শেষে অংশগ্রহণকারী খামারীদের পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
