শাহজামাল শাওন, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নে চার বছর আগে শুরু হওয়া একটি সেতুর নির্মাণ কাজ এখনো শেষ হয়নি। নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও ঠিকাদার সংস্থা কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি। ফলে প্রতিদিন চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এলাকার সাধারণ মানুষ।
স্থানীয় প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ভাঙ্গামোড় ছড়ার ওপর ৪২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৫.৫ মিটার প্রস্থের একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। কুড়িগ্রামের ঠিকাদার মোঃ রনি ২০২১ সালের ১৯ এপ্রিল কাজ শুরু করেন। চুক্তি অনুযায়ী ২০২২ সালের ১৮ এপ্রিলের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও চার বছর পেরিয়ে গেলেও সেতু নির্মাণ কাজ এখনও অসম্পূর্ণ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর দুই প্রান্তের সার্টার অসম্পূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। কাঠ ও বাঁশের ঠেসে তা টিকিয়ে রাখা হয়েছে। এদিকে সেতুর কাজ বন্ধ থাকায় স্থানীয়রা বাধ্য হয়ে ড্রামের ভেলায় চড়ে ঝুঁকি নিয়ে ছড়া পারাপার করছেন নারী-পুরুষ ও শিশুরা। প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা, বিপর্যস্ত হচ্ছে তাদের দৈনন্দিন জীবনযাপন।
স্থানীয় বাসিন্দা হাসেম আলী, এমদাদুল হক ও আনছার আলী জানান, ছড়ার এক পাশে তাদের বসতবাড়ি, অপর পাশে রয়েছে ফসলের জমি। প্রতিদিনই জমিতে যাতায়াত করতে হয়, কিন্তু সেতু না থাকায় ছোট ভেলায় পারাপার করা কষ্টকর ও ঝুঁকিপূর্ণ। ধান-পাটের মৌসুমে এ দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়।
স্থানীয় স্কুল শিক্ষক আবু তালেব সরকার বলেন, “সেতু না থাকায় ভাঙ্গামোড় ও আশপাশের প্রায় বিশ হাজার মানুষ চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও ব্যবসা—সব ক্ষেত্রেই এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। দ্রুত সেতুটি সম্পন্ন করার দাবি জানাচ্ছি।”
ইউপি সদস্য আব্দুল মালেক বলেন, “মানুষের পারাপারের জন্য কোনো বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে ড্রামের ভেলা তৈরি করে দিয়েছিলাম, কিন্তু তা যথেষ্ট নয়।
কয়েকবার ঠিকাদারকে কাজ শেষ করতে বলেছি, কিন্তু তারা উল্টো অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছে। এখন প্রতিদিনই মানুষ ঝুঁকি নিয়ে ছড়া পার হচ্ছে।”
ঠিকাদার মোঃ রনি-এর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি; তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মামুনুর রহমান বলেন, “আমি প্রায় দুই বছর আগে এ উপজেলায় যোগদান করেছি।
যোগদানের পর থেকেই সেতুর কাজ শেষ করতে তৎপর রয়েছি। ঠিকাদারও কাজ শেষ করতে আগ্রহী। তবে ছড়ার পানির গভীরতা ও মাটির সমস্যার কারণে কাজ বিলম্বিত হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সেতুর কাজ সম্পন্ন হবে।

