নজরুল ইসলাম, বোদা (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি :নদীর কূলে কাশ ফুলের নাচন, শিউলি ফুলের মাদকতা, নির্মেঘ আকাশের স্নিগ্ধ মায়াবী মাধবী চাঁদের আলো, শঙ্খের ধনী, উলুধ্বনি, কাশর ঘন্টা, ঢাকের বাদ্য আর পুরোহিতের ভরাট কন্ঠের চন্ডী মন্ত্র উচ্চারণে মা দুর্গা বন্দিতা হচ্ছেন ধরাধামে।।
পঞ্চগড়ে অত্যন্ত আনন্দঘন উৎসব মুখর এবং স্বারম্বরে সম্প্রীতির বন্ধনে পালিত হচ্ছে দুর্গাপুজা।
সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। সমাজের অসহিষ্ণুতা হিংসা-বিদ্বেষ ও দ্বন্দ্ব সংঘাতের অশুভ প্রভাব থেকে মুক্তি, মানুষের মধ্যে ঐক্য, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সহমর্মিতা প্রতিষ্ঠা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও সম্প্রীতির চেতনায় ঐক্যের বন্ধন সুদৃঢ় করতে এবং সমাজ থেকে অশুভ শক্তির বিনাশ, মানুষের মধ্যে বৈষম্য ভেদাভেদ ও অন্যায় অবিচার দূরীকরণে, সত্য সুন্দর ও কল্যাণের প্রতীক দুর্গতিনাশিনী মা দুর্গার মর্ত্যে আগমনে।
হাজার হাজার ভক্ত মাতৃ বন্দনার পুজায় ব্রতি হয়ে মায়ের অমৃত ময় প্রসাদ ধারণ করচ্ছেন।।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস মতে, দশভূজা দেবী দুর্গা অসুর বধ করে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ধরায় আসেন। দেবী দুর্গা মহাশক্তির প্রতিক। সেই মহাশক্তিকে প্রতিমার মধ্য দিয়ে চিন্ময়ী ব্রাম্মশক্তিকে দর্শন করাই দুর্গাপূজা। অশুভ শক্তিকে দমন করার জন্য দেবী দুর্গার আবির্ভাব। পুরান মতে, শিবের তেজে দেবীর মুখ, যমের তেজে কেশ, বিষ্ণুর তেজে বাহুসমূহ, চন্দ্রের তেজে সন্তানদ্বয়,ইন্দ্রের তেজে মধ্যভাগ, বরুণের তেজের জঞ্গা ও উরু, পৃথিবীর তেজে নিতম্ব, ব্রহ্মার তেজে পদযুগল। আর মহাদেব দিলেন শুল, কৃষ্ণ দিলেন চক্র, শঙ্খ দিলেন বরুন, অগ্নি দিলেন শক্তি। এই হল বিপদনাশিনী দেবী মাতা দুর্গাদেবী।
পঞ্চগড় জেলায় এবার ২৯৯ টি পুজা মন্ডপে পুজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে । মণ্ডপে মন্ডপে ভক্তরা দেবী দর্শন, অঞ্জলি, শুভশক্তি ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় দুর্গার চরণে পুষ্প অঘ্র দিয়ে প্রার্থনায় অংশ নিচ্ছেন।।
এবারে দূর্গাপুজা অনুষ্ঠান সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পালন করার লক্ষ্যে এবং সকল প্রকার অপ্রীতিকর ও দুর্ঘটনা এড়াতে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।। আযোজকদের গৃহীত নিরাপত্তা ছাড়াও সেনাবাহিনীর, বিজিবি, র্যাব,পুলিশের বিপুল সংখ্যক সদস্যকে মোতায়েন এবং টহলের দায়িত্ব পালন করচ্ছেন।