চিলাহাটি ওয়েব ডেস্ক : প্রেম মানে না কোনো বাধা, মানে না কোনো জাতি-ধর্ম। তবে এমন প্রেমের কথা খুব কম লোকই শুনেছেন, যে বিয়ে করার জন্য নিজের লিঙ্গ পরিবর্তন করেছেন। ভালোবাসার মানুষকে পেতে সুর্বণা আক্তার শিখা (২৭) নামের এক তৃতীয় লিঙ্গের মেয়ে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে হিন্দু ধর্ম গ্রহন করে অর্জুন রায় নামের এক যুবককে বিয়ে করেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে- নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার নাউয়ার হাট নামক এলাকায়। ঘটনার বিবরনে জানা যায়- একই উপজেলার জোড়াবাড়ী ইউনিয়নের মুক্তার মামুদ ও নুরিনা বেগমের তৃতীয় লিঙ্গের মেয়ে সুর্বণা আক্তার শিখা দীর্ঘদিন থেকে একই ইউনিয়নের ফুলেন চন্দ্র রায় ও শুশিলা রানীর ছেলে অর্জুন রায় এর প্রেমের সম্পর্কের এক পর্যায়ে তাদের বিয়ের আলোচনা উঠলে অর্জুন রায় ও পিতা ফুলের চন্দ্র রায় সুবর্ণাকে সার্জারি করে স্ত্রী লিঙ্গে পরিবর্তন করে নিয়ে আসেন।
এর পর ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর অর্জুন ও তার পরিবার সুবর্ণাকে কালী মন্দিরের সনাতন ধর্ম গ্রহণ করানোর পর ২৯ ডিসেম্বর ঠাকুরগাঁও নোটারি পাবলিক এর মাধ্যমে সুবর্ণা আক্তার শিখা নাম পরিবর্তন করে সুবর্ণা রায় শিখা রাখা হয়।
গত ২০২৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঠাকুরগাঁও কালিবাড়ি কালী মন্দিরে স্থানীয় পুরোহিত দ্বারা ও সামাজিক ভাবে হিন্দু শাস্ত্রের রীতিনীতি ও বিধি-বিধান অনুযায়ী পরস্পর মালা বদল ও শাখা সিদুর এর মাধ্যমে তার ছেলে অর্জুনের সাথে সুবর্ণার বিয়ে দেন।
উক্ত বিবাহটি স্থানীয় হিন্দু বিবাহ রেজিস্টার এর কর্তৃক নিবন্ধন করা হয়। ২ ফেব্রুয়ারি ঠাকুরগাঁও লটারি পাবলিক এর মাধ্যমে উক্ত বিবাহটি এফিডেভিট করা হয়।
সুবর্ণা রায় চিলাহাটি ওয়েবকে জানান- এ পর্যন্ত অর্জুন ও তার পিতা ফুলেন চন্দ্র তার কাছ থেকে প্রায় ২২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। বর্তমানে আমি তাদের টাকা দিতে না পারায় আমার সাথে বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন করে আমার শ্বশুর ফুলেন চন্দ্র ও শাশুড়ি শুশিলা রানী। আমাকে ঠিক মতো খেতে দেয়না, আমার শাশুড়ি আমার স্বামীকে বাড়ি থেকে সরিয়ে দেয়। বর্তমানে আমার স্বামী পালাতক রয়েছে।
সুবর্ণার শ্বাশুরী শুশিলা রানী জানান- এ সব অভিযোগ মিথ্যা। তবে এলাকাবাসী জানান ভিন্নতা। সুবর্ণাকে নির্যাতনের ঘটনার বেরিয়ে আসে। ঠিকমতো খেতে দেয়না সুবর্ণাকে জানালেন এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে মুঠোফোনে জোড়াবাড়ী ইউানয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান নুর আলম জানান- ঘটনাটা আসলে সত্য, অর্জুন ও তার পরিবার তৃতীয় লিঙ্গের এই মেয়েটির কাছে প্রায় ২২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে বাড়িঘর করে এবং জমি বন্ধন নেয়। তাকে মুসলমান ধর্ম থেকে হিন্দু ধর্মে ও লিঙ্গ পরিবর্তন করা সবই অর্জুন এবং তার পিতা ফুলেন চন্দ্রের কাজ। বর্তমানে তার সঙ্গে অর্জুনের পরিবার নির্যাতন করছে। আমরা বেশ কয়েকবার মীমাংসাও করে দিয়েছি, তারপরও তার সঙ্গে চলে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন।