নজরুল ইসলাম, বোদা (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি : বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক,পঞ্চগড় জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও বাফুফের গর্ভমেন্ট রিলেশন কমিটির ডেপুটি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ফরহাদ হোসেন আজাদ বলেছেন, জুলাই অভ্যুথানে আন্দোলনে গিয়ে গনতন্ত্রের জন্য যারা শহীদ ও আহত হয়েছে তাদের পরিবারদের সরকারের পাশাপাশি বিএনপি নানা ভাবে সহায়তা প্রদান করে আসছে।এসব পরিবারগুলোকে আগামী দিনে কিভাবে সহায়তা করতে পারি এটা আমাদের সবাই ভাবতে হবে।
গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে গণতন্ত্রের জন্য যারা শহীদ ও আহত হয়েছেন তারা যে সম্মান ও সামাজিক মর্যাদা পায়,সর্বক্ষেত্রে যেন তাদের সম্মান ও মর্যাদা প্রদান করা হয়।জাতি এবং সমাজের কাছে যেন সম্মান ও মর্যাদা পায়। যেমন করে আমরা একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধাদের পেয়েছিলাম।
তাদের সন্তানরা যেন ভবিষতে গর্ব করে বলতে পারে তাদের পিতা এদেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে ও ফ্যাসিষ্ট সরকারের বিদায় করতে জীবন বাজি রেখে আন্দোলনে গিয়ে শহীদ ও আহত হয়েছেন,দেশের নতুন সরকার যেন এসকল শহীদ ও আহতদের যথাযথ মর্যাদা সম্মান প্রদান করে মুল্যায়ন করে এবং তাদের দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
তিনি বলেন- শহীদ ও আহত পরিবারদের মাঝে ঈদের আনন্দ বিলিয়ে দিতে আজকের এই ঈদ আনন্দ উতসবের আয়োজন করা হয়েছে। ফরহাদ হোসেন আজাদ বলেন,আগামী দিনে একটি নতুন গনতন্ত্র দেখতে চাই,একটি অবাদ সুষ্ঠু নিরপক্ষ নির্বাচন দেখতে চাই,আমরা আশাকরি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই সেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি রবিবার ( ৮ জুন) ঈদের পরের দিন দুপুরে পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার পাঁচপীর ইউনিয়নের মেনাগ্রামে নিজ বাড়ির আঙ্গিনায়,পঞ্চগড় জেলা বিএনপি ও তার নিজ উদ্যোগে জুলাই অভ্যুথানে পঞ্চগড় জেলার নিহত ৬ টি শহীদ পরিবার ও আন্দোলনে আহত ৩৬ জন ব্যক্তি ও তাদের পরিবারদের নিয়ে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন করেছেন। এই উপলক্ষে আয়োজিত সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
ঈদ উদযাপন জুলাই অভ্যুথানে পঞ্চগড় জেলার নিহত ৬ টি শহীদ পরিবার ও আন্দোলনে আহত ৩৬ জন ব্যক্তি ও তাদের পরিবারদের সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বোদা ও দেবীগঞ্জ দুই উপজেলা,দুইটি পৌর সভা ও জেলা বিএনপির দেড় সহস্রাধিক বিএনপির নেতা-কর্মী,পঞ্চগড় জেলায় কর্মরত শতাধিক বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকসহ এলাকার সুধী বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এসময় দুপুরের খাবারের আয়োজন করা হয়।
ফরহাদ হোসেন আজাদ, শহীদ ও আহত পরিবারদের সাথে দুপুরের খাবার খেয়েছেন। জুলাই আন্দোলনে শহীদদের পরিবার,আহত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারদের সাথে ঈদুল আজহা উদযাপনের জন্য বিএনপির নেতা আলহাজ্ব ফরহাদ হোসেন আজাদ এই ঈদ উদযাপনের আয়োজন করেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন। তাদের সাথে ঈদ উদযাপনে তিনি ওই দিন নিজ বাড়িতে গরু এবং ছাগল কোরবানি করেছেন।
বিএনপির নেতা আলহাজ্ব ফরহাদ হোসেন আজাদের এমন মহতি উদ্যোগ ও আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়েছেন শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্য গুলো। ফরহাদ হোসেন আজাদের এই ব্যতিক্রমি আয়োজনটি এলাকায় বেশ প্রশংসিত হয়েছে। এই আয়োজনে আগত শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যরা পারিবারিক ঈদ আনন্দ উপভোগ করেছেন।
ঈদ উদযাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখেন শহীদ সাজু ইসলামের স্ত্রী শারমিন আক্তার, তিনি বলেন,যে আমার সন্তানের বাবাকে হত্যা করেছে,যে আমার সন্তানকে এতিম করেছে আমি তার বিচার চাই।
শহীদ সুমন ইসলামের পিতা আব্দুল হামিদ বলেন,ছেলে শোকে আমি কাতর হয়ে পড়েছি,ছেলেকে হারিয়ে সংসারের আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। আজ এখানে এসে একটু আনন্দ উপভোগ করছি। শহীদ সাগর ইসলামের পিতা রবিউল ইসলাম বলেন,আমার সন্তানকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমি হত্যার বিচার চাই।
আজকে এখানে এসে একটু আনন্দ উপভোগ করছি। বিএনপি নেতা শহী আব্দুর রশিদ আরেফিনের ভাই আশরাফুল ইসলাম বলেন- খুনি শেখ হাসিনার বিচার করতে হবে আর দেশে যেন সন্ত্রাসী সরকার না আসে সে দিকে লক্ষ রাখতে হেবে।
তিনি বলেন,ফরহাদ হোসেন আজাদ আমাদের পরিবারের সদস্যদের সব সময় খোঁজ-খবর রাখেন।
আমার ভাইয়ের ছেলের দায়িত্ব তিনি নিয়েছে। তাদের পরিবারকে ঈদ উপলক্ষে দাওয়াত করায় তারা খুব খুশি হয়েছেন। অনুষ্ঠানে অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বোদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল মান্নান,সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ আসাদ ও বোদা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দিলরেজা ফেরদৌস চিম্ময়।
