নজরুল ইসলাম, বোদা (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি :দেশে ক্ষুদ্রায়তনে চা চাষের পথিকৃৎ জেলা পঞ্চগড়। এখানে ছোট বড় চা বাগান থাকলেও বৃহৎ অংশে চাষ হয় ক্ষুদ্রায়তনে। সমতলের এই জেলায় সাধারন চাষীরা ছোট্ট ছোট বাগানে চা চাষ করে আসছে।। জেলায় এমন চাষির সংখ্যা প্রায় দশ হাজার। এবছর ক্ষুদ্রায়তন চা উৎপাদনকারী ক্যাটাগরিতে জাতীয় চা পুরস্কার ২০২৫ পেয়েছেন পঞ্চগড়ের চা চাষি এ বি এম আখতারুজ্জামান শাহজাহান।
জাতীয় চা দিবস উপলক্ষে গত বুধবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের কাছ থেকে তিনি পুরস্কার গ্রহণ করেন।এবিএম আখতারুজ্জামান পঞ্চগড় পৌরসভার রওশনাবাগ এলাকার বাসিন্দা। তাঁর গ্রামের বাড়ি সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের সাহেববাজার এলাকায়। সেখানে প্রায় ১৫ একর জমিতে ‘জামান টি গার্ডেন' নামে একটি চাবাগান গড়ে তুলেছেন তিনি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আখতারুজ্জামান পেশায় একজন আইনজীবী, সড়ক পরিবহন ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক কর্মী। ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি পঞ্চগড় সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি স্মল টি গার্ডেন ওনার্স অ্যান্ড টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি। আখতারুজ্জামান ২০১২ সালে গ্রামের বাড়িতে প্রায় পাঁচ বিঘা জমিতে চা চাষ শুরু করেন। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে তাঁর বাগানের পরিধি। বর্তমানে তাঁর চা বাগানের আয়তন প্রায় ১৫ একর। পুরো বাগানে ছায়াবৃক্ষ হিসেবে আমসহ বিভিন্ন জাতের গাছ রোপণ করেছেন তিনি। ফলে চা পাতার গুণগত মান ভালো হয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। বাংলাদেশ চা বোর্ডের পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় চা দিবস উপলক্ষে চা বোর্ডের ওয়েবসাইটে শ্রেষ্ঠ ক্ষুদ্র চা উৎপাদনকারী ক্যাটাগরির পুরস্কারের জন্য আবেদন আহ্বান করা হয়। নিবন্ধিত ক্ষুদ্র চা চাষিরা আবেদন করেন। তাঁদের কাঁচা চা পাতা উৎপাদন ও জমির পরিমাণ সংক্রান্ত কাগজপত্র যাচাই বাছাই শেষে এ বি এম আখতারুজ্জামানকে শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত করা হয়। গত মৌসুমে তাঁর বাগানে প্রতি একরে ১৬ হাজার কেজির বেশি কাঁচা চা পাতা উৎপাদন করা হয়েছে।পুরস্কার পাওয়ার পর এ বি এম আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আমার দীর্ঘদিনের পরিশ্রমের ফসল আমার এই চা বাগান। চা চাষ করে এমন পুরস্কার পেয়ে সত্যিই অনেক ভালো লাগছে। আমি সব সময়ই চেষ্টা করব গুণগত মানসম্পন্ন কাঁচা চা পাতা উৎপাদনের।বাংলাদেশ চা বোর্ডের পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফ খান বলেন, আখতারুজ্জামান চা বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী বিজ্ঞানভিত্তিকভাবে চা চাষ করেন। আবেদন করা ক্ষুদ্র চা চাষিদের মধ্যে তিনি উৎপাদন ও জমি ব্যবহারে সেরা হয়েছেন।