চিলাহাটি ওয়েব ডেস্ক : প্রায় ১০০ একর জায়গা নিয়ে বেসরকারিভাবে গড়ে তোলা হয়েছে এই ভিন্ন জগত। রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার গঞ্জীপুর এলাকায় এর অবস্থান। রংপুর শহর থেকে বাসে করে পাগলাপীর এলাকায় নামলে সিএনজি/ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় ১৫-২০ মিনিটের দূরত্বে ভিন্নজগত। তবে রাস্তা কিছুটা এবড়োখেবড়ো।
স্থানীয় লোকজন জানান, রাস্তা আগে ভালো ছিল। অনেক দিন সংস্কার না করায় খারাপ হয়ে গেছে।
ভিন্নজগতে প্রবেশ ফি ১০০ টাকা। ভেতরে ঢুকে প্রধান ফটক পার হলেই দেখা যায়, তিন দিকের বিশাল লেক ঘেরা নয়নাভিরাম দৃশ্য। এসব লেকের পাড়ে আঁচল বিছিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে বর্ষীয়ান সব বটবৃক্ষ। এসব বটের মায়ায় ধ্যানমগ্ন হতে পারেন যেকোনো মুনি-ঋষি। তবে সেদিন বটের ছায়ায় জিরিয়ে নিচ্ছিলেন অনেক দর্শনার্থী।
ভিন্ন জগতের আজব সব জগত গড়ে তোলা হয়েছে এদিকটায়।
এদিকে প্রথমেই চোখে পড়বে দেশের প্লানেটোরিয়াম। সেখানে ঢুকলে দেখা যাবে সৌরজগতের সব গ্রহ, নক্ষত্র, ছায়াপথ, নীহারিকা। থ্রিডি মুভিতে দেখা যাবে মহাবিশ্ব সৃষ্টির সেই আদি বিস্ফোরণ - বিগ ব্যাং।
দর্শনার্থীরা বললেন, এখানে সবার জন্যই বিনোদন রয়েছে। বিশেষ করে শিশুদের জন্য রয়েছে শিক্ষামূলক বিনোদন। শিশুরা আসলে অনেক শিখতে পারবে।
গাছগৃহ পেরিয়ে খালের পাড় ধরে হাঁটলে দেখা মিলবে আজব গুহার টিকিট কাউন্টার। সেখানে টিকিট কেটে ছোট্ট সেতু পার হতে হবে। এরপর দেখা মিলবে সেই গুহার।
গুহার মুখে বিরাট ‘হা’ করে আছে এক মনুষ্যমুখ। কিন্তু ভয় পেলে চলবে না। কৃত্রিম সেই মনুষ্যমুখই গুহার প্রবেশদ্বার। তবে ভিন্ন জগতে আপনাকে সবচেয়ে আকর্ষণ করবে এর সুপরিসর ফাঁকা জায়গা আর মায়াময় বটবৃক্ষের ছায়াই। এই পারেও বিরাট সব বটগাছ ছায়াদান করছে অকৃপণভাবে।
গাইবান্ধা থেকে আসা দর্শনার্থী ফারুক হোসেন আবারও বললেন, কেউ যদি প্রকৃতির মায়ায় সময় কাটাতে চান, তার ব্যবস্থা ভিন্ন জগতে আছে।
আবার কেউ যদি কৃত্রিম ভাস্কর্য, স্থান, স্থাপনার সঙ্গে পরিচিত হতে চান- তাও এখানে রয়েছে। সবচেয়ে ভালো লেগেছে এখানে যথেষ্ট গাছপালা আর ফাঁকা জায়গা রাখা হয়েছে। অনেক রাইড থাকলেও ঘিঞ্জি করা হয়নি কিছুই। যা চোখের জন্য আরামদায়ক। সেদিক থেকে এটি আসলেই ভিন্ন এক জগৎ।
রংপুর জেলা তথ্য বাতায়ন অনুসারে, ভিন্নজগতে একই সঙ্গে রয়েছে অন্তত ৫০০ পৃথক দলের পিকনিক করার ব্যবস্থা। শুধু ভেতরেই রয়েছে অন্তত ৮/৯শ গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধা। কটেজ রয়েছে ৭টি। রয়েছে থ্রি স্টার মডেলের ড্রিম প্যালেস। রয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থাও।
ভিন্নজগতের মালিক মোস্তফা কামাল বলেন, ভিন্নজগত উত্তরাঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিনোদনকেন্দ্র। এখানে যারা বেড়াতে আসেন তাদের নিরাপত্তার দায়দায়িত্ব এখানে যারা কর্মরত আছেন তাদের। রয়েছে থাকার ব্যবস্থাও।