চিলাহাটি ওয়েব, রকমারি ডেস্ক : অতিরিক্ত গরমে হাঁপিয়ে ওঠে মানুষসহ প্রাণীকূল। তবে তাপ সহ্য করার জন্য বিভিন্ন প্রাণীর রয়েছে নানা শারীরিক কায়দা। এর মাধ্যমে তাপমাত্রার ক্ষতি থেকে তারা শরীরকে রক্ষা করে।
মানুষ : গরমে মানুষের শরীর থেকে ঘাম ঝরে৷ মস্তিষ্ক তখন বলে, ‘একটু শীতল হতে হবে’৷ একক্রাইন ঘাম গ্রন্থিগুলো তখন কাজ শুরু করে এবং শিগগিরই মুখ, বগলসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে ফোঁটা ফোঁটা ঘাম জমতে থাকে। ত্বকের সেই ঘাম বাষ্পীভূত করতে শরীর তখন অতিরিক্ত তাপকে কাজে লাগায়৷ এভাবে শরীর ঠান্ডা হতে থাকে। তবে বেশি গরমে মানুষ স্নান করে, আইসক্রিম খেয়ে বা ফ্যান, ছাতা, এসি ইত্যাদি ব্যবহার করেও শরীর ঠান্ডা করার চেষ্টা করে৷
শূকর : শূকরও গরমে গোসল করে৷ তবে তাদের শরীরে ঘাম হয় না বলে সাধারণত কাদায় গড়াগড়ি করে৷ কাদা বেশিক্ষণ গায়ে থাকে, শুকাতে সময় লাগে, ওই সময় পর্যন্ত ঠান্ডা থাকে শূকরের শরীর৷
ফেনেক শিয়াল : যে কোনো শিয়াল বা কাছাকাছি গড়নের যে কোনো কুকুরের চেয়ে অনেক বড় কান থাকে ফেনেক শিয়ালের৷ সেই কান ব্যবহার করে তারা শরীর ঠান্ডা রাখে৷ ফেনেক শিয়ালের দেখা মেলে মরুভূমি অঞ্চলে৷ সেখানে প্রায়ই তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১২২ ডিগ্রি ফারেনহাইট)-এর চেয়েও ওপরে ওঠে৷ তখন ওই বড় কান দুটো রীতিমতো পাখার কাজ করে৷
হাতি : সব প্রাণীর গায়ে যে রোম বা পশম থাকে তা তাদের শরীরকে গরম রাখে৷ কিন্তু হাতির ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ঠিক উল্টো৷ তাদের শরীরে খুব ছোট ছোট যে চুল বা রোম থাকে, সেগুলো শরীরকে শীতল রাখতে সহায়তা করে৷ প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা গবেষণা করে বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন৷
উট : উট পিঠের কুঁজোয় চর্বি জমিয়ে রাখে এবং যখন খাদ্য ও পানির অভাব দেখা দেয়, তখন সেই চর্বি গলিয়েই শরীরের চাহিদা মেটায়৷ ওই চর্বি গরমের সময় শরীরের বাড়তি উত্তাপ বের করে দিতেও সহায়তা করে৷ পানি না পেলেও উট কয়েক মাস বেঁচে থাকতে পারে৷ পানি পেলে অবশ্য ১০০ লিটারেরও বেশি পানি পান করে তেষ্টা মিটিয়ে নেয়৷
কুকুর : কুকুরের ত্বকেও ঘাম ঝরানোর গ্রন্থি নেই৷ তীব্র গরমে তারা থাবা এবং নাকের মাধ্যমে শরীরের তাপ বের করে। তাছাড়া তীব্র গরমে কুকুরদের যে হাঁপাতে দেখা যায়, জিহ্বা বেরিয়ে থাকে, তখন কিন্তু শরীরের অতিরিক্ত তাপ নির্গত হয়৷ জিহ্বা গরম হয়ে গেলে কুকুর মিনিটে ৪০০ বার পর্যন্ত শ্বাস নেয়৷ এর ফলে জিহ্বার আর্দ্রতা বাষ্পীভূত হয় এবং তার ফলে শরীর শীতল হয়৷
চাই মানুষের সহায়তা : অনেক পোষা প্রাণী গরমের সময় শরীরের তাপমাত্রা ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না৷ এ কারণে খুব গরমে অনেব প্রাণী হিটস্ট্রোকে মারা যায়। গ্রীষ্মের দাবদাহের সময় গাড়িতে দরজা-জানলা বন্ধ করে রেখে যাওয়ার কারণে অনেক কুকুর মারাও যায়৷ তাই কখনো গাড়িতে আপনার পোষা কুকুর রেখে যাবেন না৷ গিনিপিগ বা খরগোশও গরমে দ্রুত কাহিল হয়ে পড়ে৷ তখন তাদের পর্যাপ্ত ছায়া এবং পানি দিতে হয়।