নজরুল ইসলাম, বোদা (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি : পঞ্চগড়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, শুরু থেকে একটা কথা বলেছি যে, শাপলা প্রতীক পেতে আমাদের কোন আইনগত বাধা ছিল না, বলেই আমরা শাপলা প্রতীকটা চেয়েছি। আমরা তো সকল বিষয়ে যাচাই করেছি। এখন আমাদের যেটা মনে হচ্ছে যে, নির্বাচন কমিশন কোন একটা কিছুর ভয়ে কিংবা চাপে তারা এই স্বেচ্ছাচারিতা এবং বৈষম্যমূলক আচরণটা করছে। যে তারা আমাদেরকে শাপলা প্রতীকটা দিবে না।
তিনি বুধবার বিকেলে জেলার আটোয়ারী উপজেলার রাধাঁনগর ইউনিয়নের মালিগাঁও তেঁতুলতলা শ্রী শ্রী সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরে দূর্গা মন্ডপ পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যেম কর্মীদের এ কথা বলেন।
সারজিস বলেন, আমরা রাজনৈতিক দল হিসেবে এখন নিবন্ধন করার সকল যোগ্যতা অর্জন করেছি। এটা পেতে আমাদের কোনও বাধা নেই। এর পরে আমরা আমাদের যাত্রা শুরু করেছি এক বছর কিন্তু হয়নি। তাতেই আমাদের মার্কা নিয়ে বড় গোষ্ঠীর, বিশাল বড় মাথাব্যথা। মানে তারা মার্কার যে ভার এই চাপটাই তারা নিতে পারছে না। কিন্তু আমরা স্পষ্ট করে বলি যে আমাদের যদি এখানে কোন আইনগত বাধা থাকত। তাহলে আমরা কথা বলতাম কিন্তু একটা অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। যদি এরকম স্বেচ্ছাচারিতা আচরণ করে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে তাদের দ্বারা এই বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তারা যদি এইটা বহাল রাখে আমরা আগামীতে এই নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচনে যেতে এনসিপি অনাস্থা প্রকাশ করবে।
তিনি আরো বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে যখন আমাদেরকে আবার আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে রাজপথে নামতে হয়। এটাই হচ্ছে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম প্রথম ব্যর্থতা। দ্বিতীয়ত, যখন মানুষ আবার রাজপথে নামল তাদের জায়গা থেকে এবং নামার পরে মানুষ রাজপথে দিনের পর দিন আন্দোলন করল এবং যমুনা ঘেরাওয়ের পর্যায় পর্যন্ত গেল। তখন তারা এই রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের যে ধাপ সেই ধাপে গেল। যদি এখন বিভিন্ন কারণে আন্তর্জাতিক মহলে মানে বাংলাদেশের মানুষেরা এত ত্যাগ তিতিক্ষা সবকিছু ভুলে গিয়ে। বাংলাদেশের মানুষের এত রক্ত বিসর্জন, প্রাণ বিসর্জন ভুলে গিয়ে, নিজের ইমেজ এর চেক এন্ড ব্যালেন্স করার জন্য তিনি সুশীল সাজতে শুরু করেন। এই অভ্যুত্থানের মতো এত বড় ঘটনা ভুলে গিয়ে তিনি যদি এই স্টেটমেন্ট আসলে দিয়ে থাকেন। যে আওয়ামী লীগ আবার কার্যক্রম আবার সচল করা হতে পারে। তাহলে আমরা শুধু কথাই বলি, বাংলাদেশের মানুষ ছাড় দিতে পারে কিন্তু ছেড়ে দেবে না।
সারজিস বলেন, এত বড় একটা দেশ। এত মানুষের আকাঙ্ক্ষা, অভ্যুত্থান, সবকিছু স্যাক্রিফাইস করে। আমার আন্তর্জাতিক মহলে নিজের ইমেজ এর চেক এন্ড ব্যালান্স করতে হবে, এরকম মানুষকে আমরা প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ওই জায়গায় তাকে ওই চোখে দেখে ওখানে বসানো হয়নি।
আমরা তাকে স্পষ্ট করে বলব তাকে এবং যারা এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে রয়েছেন, বাংলাদেশের মানুষ ওই প্রশ্নে আপসহীন। খুনি শেখ হাসিনা বাংলাদেশের দেয়ালে দেয়ালে এই লেখাটা লেখা হয়ে গিয়েছে। রক্ত দিয়ে লেখা হয়েছে। যারা এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সুবিধাভোগী, তারা তাদের জায়গা থেকে এটা ভুলে যেতে পারে।
তিনি আরো বলেন, ওই যে দেয়াল লিখা আছে। যে মা তার পোলার লাশ নিজের হাতে ছুঁয়েছে ওই মা কিন্তু এটা ভুলতে পারবে না। ওই মা যতদিন না ভুলবে আমরা ততদিন এই অভ্যুত্থানে রাজপথে লড়াই করেছিলাম। আমরা এইটা ভুলবো না ভুলতে দিবো না। আমরা স্পষ্ট করে একটা কথা বলি। এই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আর কোন রাজনীতি চলবে না। এই বাংলাদেশে স্পষ্টভাবে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ হয়েছে। আওয়ামী লীগ দল হিসাবে আইনগতভাবে নিষিদ্ধ হবে এবং করতে হবে এটা ছাড়া অন্য কোনো অপশন নাই।
পূজা মণ্ডপ পরিদর্শনকালে আটোয়ারী উপজেলা এনসিপির নেতাকর্মীরা সহ সনাতন ধর্মাবলম্বীরা উপস্থিত ছিলেন।
