Type Here to Get Search Results !

সুন্নত নামাজ না পড়ার মুখে টুপি গুজে ছাত্রকে বেধরক মারধর

নজরুল ইসলাম, বোদা (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি : যোহরের নামাজে ফরজ শেষে সুন্নত নামাজ না পড়ার অভিযোগে এক মাদরাসা ছাত্রকে মুখে টুপি গুজে করা হয়েছে বেধরক মারধর। এসময় লাঠি দিয়ে মুখে গুজে দেয়া টুপি গলায় ঢুকিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন ওই মাদরাসা শিক্ষক। এতে মাদরাসা ছাত্রের মুখের তালু কয়েক স্থানে ছিলে যায়। তবুও ক্ষান্ত না হয়ে কয়েকজন ছাত্র ভূক্তভোগীর দুই হাত ধরে থাকেন আর হুজুর দুই হাত, ঘাড়, গলা সহ কোমরের নিচে করেন বেধরক মারধর। কোনমতে পালিয়ে বাঁচতে চাইলেও আবারো ভূক্তভোগীকে মারধরের জন্য হুজুরের সামনে এনে দেয়া হয়। শিক্ষকের নির্মম মারধরের শিকার নাসির বর্তমানে হাসপাতালের বেডে মারধরের যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে। শিশুটির পুরো শরীর জুড়ে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। গেল বুধবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে পঞ্চগড় জেলা শহরের লিচুতলা এলাকার আত-তাক্বওয়া ওয়াস্সুন্নাহ হিফজ্ মাদ্রাসায়। মাদরাসাটির প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক হাফেজ মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান আসাদের বিরুদ্ধে উঠেছে এমন গুরুতর অভিযোগ। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে পঞ্চগড় সদর থানায় আসাদুজ্জামান আসাদসহ তিন শিক্ষকের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনকে আসামী করে মামলার অভিযোগ জমা দিয়েছেন ওই মাদরাসা ছাত্রের বাবা বেলাল হোসেন। এদিকে, ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন অভিযুক্ত মাদরাসা শিক্ষক। ঘটনার পর থেকেই তিনি পলাতক রয়েছেন। ভূক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম সাব্বির হোসেন নাসির (১২)। তার বাড়ি সদর উপজেলার পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নের বলেয়াপাড়া এলাকায়। স্বর্ণকার বেলাল হোসেন ও গৃহিনী ইয়াসমিন আক্তারের একমাত্র ছেলে নাসির। সে মাদরাসাটিতে হেফজ বিভাগে পড়াশোনা করছে। জানা গেছে, গত তিন মাস আগে মাদরাসাটিতে হেফজ বিভাগে ভর্তি হয় নাসির। ভর্তির কিছুদিন পরেই একবার মারধরের শিকার হয় সে। সেসময় বাড়িতে চলে গেলেও ছেলেকে কোরআনের হাফেজ বানাতে হবে এমন দৃঢ়চিত্তে আবারো মাদরাসাতে ফিরিয়ে দিয়ে যায় পরিবার। তবে এবারের মারধর যে অন্য সময়কে ছাড়িয়ে গেছে। ভূক্তভোগী মাদরাসা ছাত্র সাব্বির হোসেন নাসির জানায়, আমি সুন্নত নামাজ না পড়ায় আসাদ হুজুর আমাকে মারধর শুরু করে। আমি চিৎকার করলে আমার মুখে টুপি গুজে দিয়ে মারতে থাকে। কয়েকজন ছাত্র হাত ধরে থাকে আর তিনি আমার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারতে থাকেন। যেভাবে আমার মুখে টুপি গুজে দিয়েছে আরেকটু হলে আমি মরেই যেতাম। আমার গলা দিয়ে রক্ত বের হয়ে গেছে। বাবা বেলাল হোসেন বলেন, আমার ছেলেকে এর আগেও নির্যাতন করা হয়েছে। ওইদিন যেভাবে মুখে টুপি গুজে দিয়ে মারধর করা হয়েছে তা বর্ণনা করার মতো নয়। কোন সুস্থ মানুষ একটা শিশুটিকে এভাবে মারধর করতে পারে না। আমার ছেলেকে তারা মেরে ফেলতে চেয়েছিল। ও কোনমতে পালিয়ে বেঁচে গেছে। এখন আবার আসাদ হুজুর আমাদের দেখে নেয়ার হুমকি দিচ্ছে। আমরা ন্যায় বিচার চাই। এ ঘটনায় মাদরাসা কর্তৃপক্ষের কেউ কথা বলতে রাজি হন নি। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) রহিমুল ইসলাম বলেন, শিশুটির শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বর্তমানে সে হাসপাতালেই ভর্তি আছে। আমরা তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিচ্ছি। পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আব্দুল্লা হিল জামান বলেন, শিশু নির্যাতনের অভিযোগে তার বাবা থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। মামলা প্রক্রিয়াধীন। অভিযোগের আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিভাগ

Top Post Ad

Hollywood Movies