নজরুল ইসলাম, বোদা (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি :পঞ্চগড়ে গুম হওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে মানববন্ধনে গুমের শিকার ছেলেকে ফিরে পাওয়ার দাবি করেছেন তাদের পরিবারের স্বজনসহ স্থানীয়রা। শনিবার বৃষ্টিস্ন্যত সকালে পঞ্চগড় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে পঞ্চগড়-ঢাকা জাতীয় মহাসড়কের পাশে গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে মানবাধিকার সংগঠন অধিকার এই মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন গুমের শিকার ইমাম হাসান বাদলের মা মিনারা বেগম, আল আমিনের বাবা মনু মিয়া, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন পঞ্চগড়ের সাধারণ সম্পাদক আজহারুল ইসলাম জুয়েল, কলেজ শিক্ষক শেখ সাজ্জাদ হোসেন, মানবাধিকার কর্মী ও সিনিয়র সাংবাদিক শহীদুল ইসলাম, অধিকার এর মানবাধিকাকর্মী আব্দুল্লাহ আল মামুন রণিক ও অধিকারের পঞ্চগড়ের ফোকাল পারসন সাংবাদিক সফিকুল আলম।
ঘন্টাব্যাপি মানববন্ধনে বক্তারা জানান, বিগত সরকারের সময়ে সারা দেশে শত শত মানুষকে গুম করা হয়েছে। এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে গুম করা হয়েছে। এখনো অনেক বাবা মা তার সন্তানের অপেক্ষার প্রহর গুণছেন। তাই দ্রুত প্রত্যেক গুমের শিকার ব্যক্তিকে খুঁজে বের করাসহ জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। একই সাথে রাষ্ট্রীয়ভাবে গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারকে আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ তাদের পুনর্বাসনের দাবিও জানানো হয়।
গুমের শিকার ইমাম হাসান বাদলের মা মিনারা বেগম, বিগত সরকারের সময় আমার ছেলেকে গুম করা হয়েছে। প্রায় ১০/১২ বছর ধরে ছেলের জন্য ঘুরে অবশেষে ছেলের মুখ না দেখেই তার বাবা মারা যান। সর্বোশেষ ছেলেকে ফেরতের জন্য বর্তমান সরকারের গুম কমিশনে অভিযোগ দিয়েছি। আমার গুমের শিকার ছেলের যদি মৃত্যু হয়, তাহলে শরীরের একটি হাড় হলেও ফেরত চাই।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিখোঁজ আল আমিনের বাবা মনু মিয়া বলেন, আমার ছেলে জুলাই আন্দোলনে মিছিলের সামনে ছিল। গত পাঁচ আগস্ট আন্দোলনের সময় পঞ্চগড় থেকে তাকে গুম করা হয়। এনিয়ে থানায় একটি মামলাও করেছি। আমি আমার ছেলেকে ফেরত চাই।
মানববন্ধন শেষে মানবাধিকার কর্মীরা একটি র্যালি বের করেন। র্যালিটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুরাতন ক্যাম্প এলাকার মিডিয়া হাউজে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচীতে বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী, কলেজ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ অধিকারের স্থানীয় মানবাধিকার কর্মীরা অংশ নেন।