Type Here to Get Search Results !

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ই হোক শিশুদের শিক্ষা শিকড়


ইব্রাহীম মিঞা, বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি, চিলাহাটি ওয়েব : চলতি বছর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় শুধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পিটিআই সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয় এবং সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংযুক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নিতে পারবে—এমন নির্দেশনা দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
এর ফলে বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৮৫ লাখ শিক্ষার্থী এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে নানা মহলে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একটি অংশ শিক্ষার্থীদের মানসিক ক্ষতির আশঙ্কা দেখিয়ে বিক্ষোভ, মানববন্ধন, স্মারকলিপি দিচ্ছে। কিন্তু প্রকৃত চিত্রটা কী? সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো হচ্ছে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মূল ভরকেন্দ্র। এখানকার অধিকাংশ শিক্ষার্থী দরিদ্র ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান, যারা শিক্ষা অর্জনের জন্য নির্ভর করে সরকারের সহায়তা ও প্রণোদনার ওপর। এদের জন্য বৃত্তি মানে কেবল পুরস্কার নয়, এটি হচ্ছে টিকে থাকার অনুপ্রেরণা।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা যথার্থই বলেছেন, সরকার সবাইকে শিক্ষা দিতে চায়, কিন্তু তার জন্য সবাইকে সরকারি বিদ্যালয়ে আসতে হবে। সচেতন মহলের দাবি “অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কাঠামোগত সীমাবদ্ধতায় ভুগছে, যেগুলোর ওপর সরকারি তদারকি সীমিত। ফলে মান নিয়ন্ত্রণে কিছু জায়গায় ঘাটতি দেখা যায়।করোনাকালে হাজার হাজার কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হয়ে গেছে শুধুমাত্র অর্থনৈতিক কারণে, যেখানে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তাদের কোনো দায় ছিল না। এই প্রতিষ্ঠানগুলো মূলত অস্থায়ী ও অনির্ভরযোগ্য, যেখানে কোনো নিয়ম নেই, নেই কোনো মান নিয়ন্ত্রণ।
অনেকে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারাকে বৈষম্য বলে দাবি করছেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে—এই কিন্ডারগার্টেনগুলো কি সংবিধান অনুযায়ী পরিচালিত হয়? বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা আইন ১৯৯০ অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষা হবে সার্বজনীন, অবৈতনিক ও রাষ্ট্র-নির্ধারিত। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সেই কাঠামোর মধ্যে নেই। তাহলে তাদের শিক্ষার্থীদের সরকারি সুবিধা চাইবার অধিকার কোথায়? 
বেসরকারি স্কুলে পাঠরত অনেক শিক্ষার্থীর জন্মনিবন্ধন, নাম, বানানসহ বিভিন্ন ভুল থেকে যায়—যা পরবর্তীতে এসএসসি বা এইচএসসিতে গিয়ে বড় ধরনের সমস্যা তৈরি করে। সরকারি বিদ্যালয়গুলোতে এই বিষয়গুলো সরকারি নজরদারিতে শুদ্ধভাবে হয়, ফলে শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনেক বেশি নিরাপদ ও স্থিতিশীল।এছাড়াও শিক্ষক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও স্থায়ী,বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষা উপকরণ, উপবৃত্তি ও মিড-ডে মিল,‌ কমন কারিকুলাম ও মূল্যায়ন ব্যবস্থা, শিক্ষার্থীর তথ্য ডিজিটালভাবে সংরক্ষণ ইত্যাদি। এখন সময় গার্ডিয়ানদের সচেতন হওয়ার।
কিন্ডারগার্টেনের বাহারি বিলবোর্ড আর ভৌতিক নাম নয়, সন্তানকে দিন রাষ্ট্র স্বীকৃত, নিয়মতান্ত্রিক, নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য শিক্ষা। সরকারি বিদ্যালয়েই গড়ে উঠুক আগামীর বাংলাদেশ।
এবিষয়ে বিরামপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রুনা লায়লা বলেন, বৃত্তি পরীক্ষায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে না রাখার সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী এবং শিশুদের ভবিষ্যতের নিরাপত্তার কথা ভেবে নেওয়া হয়েছে।
বিভাগ

Top Post Ad

Hollywood Movies