Type Here to Get Search Results !

পঞ্চগড়ে জুলাই শহীদ ও আহতদের ঈদ উপহার ও আর্থিক অনুদান বিতরণ

নজরুল ইসলাম ,বোদা,পঞ্চগড় প্রতিনিধি :জীবনের সবচেয়ে ভয়াবহ মুহূর্তের স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছেন তারা। কেউ হারিয়েছেন প্রিয়জন, কেউবা আজীবনের জন্য থেকে গেছেন শারীরিক ও মানসিক ক্ষত নিয়ে। সেই ভয়াল জুলাইয়ের দিনে, অন্য জেলায় যাঁরা শহীদ ও আহত হয়েছিলেন— তাঁদের পাশে দাড়িয়েছে এবার জুলাই শহীদ ও যোদ্ধা পরিবার জেলা সমাজকল্যাণ কমিটি এবং "ওয়ারিয়র্স অফ জুলাই, পঞ্চগড়"। মঙ্গলবার (৩ জুন) পঞ্চগড় জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে ৩৬ জন আহত ও নিহতদের পরিবারের হাতে তুলে দেন ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান ও ঈদ সামগ্রী। পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক জনাব সাবেত আলী বলেন,"জুলাই-আগস্টে যারা শহীদ হয়েছেন, তাঁদের ত্যাগ আমাদের গর্ব ও প্রেরণার উৎস। পঞ্চগড় জেলা প্রশাসন সবসময় এই পরিবারগুলোর পাশে থাকবে। মানবিক দায়িত্ব থেকে, দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকে। এই আয়োজন তাদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা জানানোর এক ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র।" জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক রত্নগর্ভা মা সামসি আরা জামান বলেন, "এরা শুধু কিছু সংখ্যা নয়— এরা আমাদের বিবেকের স্মারক। আমরা চাই, কেউ যেন ভুলে না যায় কাদের রক্তে লেখা হয়েছে এই ইতিহাস।" বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক অনিরুদ্ধ কুমার রায়, জামায়াতের আমির ইকবাল হোসেন, যুবদলের সদস্য সচিব নুরুজ্জামান বাবু, ওয়ারিয়র্স অফ জুলাই, পঞ্চগড়'র আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ রানা ও সদস্য সচিব এ.কে.এম সাজ্জাদুর রহমান আকাশ। এবিষয়ে চোখে গুলিবিদ্ধ হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় থাকা রবিউল ইসলাম বলেন,"আমার এক চোখের আলো অনেকটাই নিভে গেছে, কিন্তু এখনো আশায় বাঁচি। আজকের এই সহানুভূতি আমাদের বাঁচার সাহস জোগায়।" পুলিশের গুলিতে আহত আব্দুর রশিদ বলেন, "ভুলে যাওয়া সহজ, কিন্তু মনে রাখা অনেক কঠিন। আজকের এই আয়োজন আমাদের জানান দেয়, কেউ একজন এখনো মনে রেখেছে।" নিহত শহীদের বাবা আব্দুল হামিদ বলেন, "ছেলেকে তো আর ফিরে পাব না। কিন্তু এমন দিনে কেউ পাশে এসে দাঁড়ালে মনে হয়, সে শুধু আমার ছেলে নয়, জাতির সন্তান ছিল।" এই আয়োজন শুধু অনুদান বিতরণ নয়, ছিল একান্ত মানবিক দায়বদ্ধতার প্রকাশ। শোকের মাঝেও সম্মান থাকে, বেদনার মাঝেও দায়িত্ববোধ জাগে। সেটিই প্রমাণ করে দিল পঞ্চগড়বাসীর এই উদ্যোগ।
বিভাগ