নজরুল ইসলাম, বোদা (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি : পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভক্তি রানী (১৮) নামে এক নারী রোগীর শরীরে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন (ম্যাগনেসিয়াম সালফেট) পুশ করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই নারীর পরিবার জেলা সিভিল সার্জনের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছে। অভিযোগের পর বিষয়টি তদন্তে কমিটি গঠন করেছে সিভিল সার্জন।
গত সোমবার (২১ এপ্রিল) রাতে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন পুশ করার বিষয়টি দেখতে পান রোগীর স্বজনেরা। বর্তমানে ওই নারী পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের একলামশিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে।
ভক্তি রানী পঞ্চগড় সদর উপজেলার কামাত কাজলদীঘি ইউনিয়নের ছোবারভিটা গ্রামের সবুজ চন্দ্র রায়ের স্ত্রী।
রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, গত বুধবার ভক্তি রানী একটি ক্লিনিকে ছেলে সন্তান প্রসব করে। এন পর একলামশিয়ায় আক্রান্ত হলে সোমবার সকালে তাকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এ সময় হাসপাতালের চিকিৎসক বিভিন্ন ওষুধ ও স্যালাইন দেন। পরে স্যালাইন পুশ করা হয়। তাঁর শরীরে দুই বোতল ১০০ মিলিগ্রামের স্যালাইন পুশ করার পর দেখা যায় স্যালাইনের মেয়াদ নেই। হাসপাতাল থেকে দেওয়া স্যালাইনের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। একটি স্যালাইনের প্যাকেটে মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ১২/২০২৪, অর্থাৎ চার মাস আগে মেয়াদ শেষ হয়েছে।
রোগীর স্বজন অনিল চন্দ্র রায় অভিযোগ করে বলেন, স্যালাইনের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় পরেও নার্সরা ভক্তি রানীর শরীরে পুশ করেছে। স্যালাইন পুশ করার পর কাউকে চিনতে পারে না। আরেক স্বজন বলেন, একটা স্যালাইন শেষ হয়েছে, পরে আরেকটি নতুন স্যালাইন দিলে লক্ষ্য করি স্যালাইনটির মেয়াদ চার মাস আগে শেষ হয়ে গেছে। পরে স্যালাইন খুলে ফেলা হয়। নার্স মেয়াদের তারিখ না দেখেই স্যালাইন পুশ করে। সে তার দায়িত্বে অবহেলা করেছে। আর কোনো রোগীর সঙ্গে যেন এই ধরনের ঘটনা না ঘটে, সে জন্য প্রতিকার এবং বিচার চাই।
রোগীর স্বামী সবুজ চন্দ্র রায় বলেন, আমার ভাই স্যালাইনে মেয়াদ উত্তীর্ণ দেখার পরেই নার্সদের বললে তারা খুলে ফেলে। পরে আবার স্যালাইন চাইতে গেলে দেখে ডেট পার। রাতেই বাইরে থেকে কিনে এনে স্যালাইন দেই।
হাসপাতালের এক স্টাফ নার্স বলেন, রোগীকে যে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে, সেটা সরকারি স্যালাইন ছিল। রোগীকে স্যালাইন দেওয়ার পরে স্যালাইনের মেয়াদ চার মাস আগেই শেষ হইছে। আমরা দেখা মাত্রই খুলে ফেলছি।
পঞ্চগড় সিভিল সার্জন মিজানুর রহমান বলেন, মৌখিক ভাবে বিষয়টি জেনেছি। এ ব্যাপারে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কেন, কীভাবে ঘটল ঘটনাটি জানার চেষ্টা করছি। আপাতত রোগীটি সুস্থ আছে বলেও জানান সিভিল সার্জন।