নজরুল ইসলাম, বোদা (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি :পঞ্চগড় জেলা শহরের গিনি হাউজ জুয়েলার্স নামের একটি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে দলবদ্ধ চুরির ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার ভোরে জেলা শহরের ভয়াবহ এই চুরির ঘটনা ঘটে। এতে দোকানের লকার ভেঙে ও তৈরী গহনা সহ অন্তত ৫০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার চুরি হয়েছে বলে দাবি দোকান মালিকের। একদিকে বাড়িতে মেয়ের বিয়ের আয়োজন আর অন্যদিকে দোকানের থাকা সব স্বর্ণালঙ্কার চুরির ঘটনায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন দোকান মালিক লব বণিক। এদিকে চুরির ঘটনার প্রতিবাদে জেলার সকল জুয়েলারি সব দিনভর বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন পঞ্চগড় জেলা শাখা। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তারা।
বণিকরা জানান, গিনি হাউজ জুয়েলার্সের মালিক লব বণিকের মেয়ের গায়ে হলুদ ছিলো সোমবার। মঙ্গলবার দিনভর বিয়ের আয়োজন। বাড়ি ভরা আত্মীয় স্বজন। কিন্ মঙ্গলবারের সকালটি তার জন্য শুভকর ছিলো ছিলো না। সকালে দোকানে গিয়ে দেখতে পান তালা কেটে তার দোকানের সব স্বর্ণালঙ্কার চুরি হয়ে গেছে। সিসি ক্যামেরায় দেখা যায় ১১/১২ জনের একটি সংঘবদ্ধ চোরচক্র ভোর ৬ টায় দোকানের তালা কেটে প্রবেশ করে সব চুরি করে নিয়ে যায়। একদিকে একমাত্র মেয়ের বিয়ে আরেক দিকে দোকানের ভয়াবহ চুরিতে দিশেহারা হয়ে পড়েন তিনি।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন পঞ্চগড়ের সাধারণ সম্পাদক মধুসুধন বণিক রনি বলেন, ফজরের নামাজের পর গার্ডরা বাড়িতে চলে যান। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায় এই ফাঁকে ৫ টা ৫৪ মিনিটে ১১/১২ জনের একটি চোরচক্র দোকানের তালা কেটে প্রবেশ করে অন্তত ৫০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়ে যায়। কয়েকজনের মুখে মাস্ক থাকলেও বেশিরভাগের মুখে কোন মাস্ক ছিলো না। তবে ফেইসগুলো অপরিচিত। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী দোকান মালিকের পক্ষ থেকে থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। দিন দুপুরে এমন চুরির ঘটনার প্রতিবাদে আমরা আজ সারাদিন সব জুয়েলারি দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
গিনি হাউস জুয়েলার্সের মালিক লব বণিক জানান, সোমবার রাতে মেয়ের বিয়ের গায়ে হলুদ উপলক্ষে বাড়িতে আনন্দ করছিলাম। পরে ঘুমাতে গিয়ে দেরি হয। সকালে আমার ভাগ্নে নন্দ দত্তকে দোকান খুলতে পাঠাই। সে গিয়ে দেখে দোকানের দুইটি তালা কাটা। দোকান খুলে ভিতরে দেখে তৈরি গহনার মালামাল গুলো একটিও নেই। পরে এসে দেখতে পায় লকারের ভিতর রাখার সোনা গুলোও নেই। আমার ৫০ ভরির মতো স্বর্ণালংকার ও স্বর্ণ চুরি হয়েছে। এতে প্রায় ৭৫ লাখ টাকার মত আমার খোয়া গেছে। মেয়ের বিয়ের আনন্দ বিষাদে পরিণত হয়েছে। আমার পুলিশের কাছে অনুরোধ দোষীদের সনাক্ত করে ব্যবস্থা যেন নেয়া হয়। একই সাথে আমার চুরি যাওয়া সোনা গুলো যেন উদ্ধার করা হয়।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লা হিল জামান বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। চুরির সাথে জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে ও মালামাল উদ্ধারে কাজ করছে পুলিশ।