Home » » পলাশবাড়ীতে পিঠার ধোঁয়ায় ঘ্রাণ নিচ্ছে পিঠা প্রেমিকরা

পলাশবাড়ীতে পিঠার ধোঁয়ায় ঘ্রাণ নিচ্ছে পিঠা প্রেমিকরা

চিলাহাটি ওয়েব ডটকম : Thursday, December 28, 2023 | 12/28/2023 12:05:00 AM

ছাদেকুল ইসলাম রুবেল, গাইবান্ধা : বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসের সঙ্গে মিশে আছে নিজস্ব খাদ্যাভ্যাস,এর একটি স্বতন্ত্র অনুষঙ্গ পিঠাপুলি।শীত এলে বোঝা যায় পিঠা বাঙালির কতটা পছন্দের। হিমেল হাওয়া বয়ে যাওয়ার এ সময়টাই পিঠার। গ্রামের মানুষ প্রায় প্রতিদিনই পিঠার স্বাদ নেয়। তবে শীত শীত বাতাসে পিঠা বঞ্চিত থাকে না শহরবাসীও। অলিগলি থেকে শুরু করে ব্যস্ত রাস্তার ফুটপাত ও দোকানে তৈরি হয় হরেক রকমের পিঠা। এসব দোকানে গিয়ে নগরবাসী নিচ্ছে পিঠার স্বাদ। হেমন্তের শুরুতেই শহরের রাস্তার ধারে মাটি ও গ্যাসের চুলা নিয়ে বসে যায় মৌসুমি পিঠা বিক্রেতারা। এসব দোকানে মেলে চিতই, ভাপাপিঠা। গরম-গরম ধোঁয়া ওঠা চিতই পিঠার মূল আকর্ষণ ভর্তা। খেজুরের গুড় ও নারিকেল দিয়ে তৈরি ভাপাও পাওয়া যাবে এসব অস্থায়ী পিঠার দোকানে। এছাড়া কিছু দোকান বছরব্যাপীই পিঠা তৈরি ও বিক্রির সঙ্গে সংযুক্ত। হরেক রকম পিঠার সন্ধান মেলে সেখানেও। শীত উপলক্ষে বরাবরই উত্তরের অন্যতম শহড় পলাশবাড়ী অন্যতম আকর্ষণ হয়ে ওঠে ‘পিঠা ঘর। অন্যান্য বছরের মতো এবারও রোডে রোডে হরেক রকমের পিঠা নিয়ে সাজানো হয়েছে পিঠা ঘরগুলো। ভোজন রসিকদের কাছে এসব পিঠা ঘরের আকর্ষণ ব্যাপক। এখানে মেলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পিঠাও। পলাশবাড়ী পৌর শহড়ের কালিবাড়ী রোডে দেখা যায়, ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, ডিম চিতই, পুলি পিঠা, পাটিসাপটা, তেলের পিঠা, জামাই পিঠা, সঙ্গে বেশ কয়েক ধরনের মজাদার ঝালের পিঠাও আছে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের নকশি পিঠা তো আছেই। আর এখানকার পিঠার সুনাম ও মানের কারণে বেচাবিক্রিও বেশ ভালো। কথা হয় রাব্বীর মোড এস এম বিদ্যালয় মার্কেটে পিঠার ক্রেতা মশিউর রহমানের সঙ্গে। গ্রামের বাড়িতে শীতে পিঠাপুলি তৈরি হয়। পথের পাশে গরম পিঠা দেখে লোভ সামলাতে পারেননি তিনি। গরম চিতই পিঠায় ফুঁ দিতে দিতে সরিষার ভর্তা লাগিয়ে খাচ্ছিলেন। কথা হলে বলেন, বাড়িতে যেসব পিঠা খাই, সেগুলোর স্বাদ এক রকম। সেগুলো আবার রেখে রেখে খাই। ঠাণ্ডা হয়ে যায়। এখানে গরম-গরম খাওয়ার স্বাদ অন্য রকম। দোকানিরা বললেন, চিতই পিঠার মূল আকর্ষণ কয়েক পদের ভর্তা। সরিষা, কালোজিরা, ধনেপাতা, শুঁটকি, ডালের ভর্তার চাহিদা বেশি। একটি চিতই পিঠা বিক্রি হয় ১০ টাকায়। ভাপা পিঠাও বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা করে। চিতই, ভাপার পাশাপাশি নারিকেল, কলা, তাল দিয়েও তৈরি পিঠাও দেখা গেছে কিছু দোকানে। মাংস দিয়ে বানানো পিঠা পাওয়া যায় কোথাও কোথাও। পিঠা বিক্রেতা মধু বলেন, গ্রামের ঐতিহ্যবাহী সব পিঠা আমরা বিক্রি করি। গত প্রায় ৫ বছর ধরে পিঠা বিক্রি করছি। বিভিন্ন অঞ্চলের পিঠা এখানে তৈরি করা হয়। ভালো মানের পিঠা বানাই বলে আমাদের সুনাম রয়েছে। দামও ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যে। তিনি বলেন, এখানে সবমিলিয়ে ৪৫ রকমের পিঠা পাওয়া যায়। এর মধ্যে অন্যতম পাটিসাপটা, মালপোয়া, রসফুল, নারকেলের ভাজা পুলি, ঝাল পোয়া, ফিরনি, বিবিখানা, পুডিং,ক্ষীর কুলি, পান পিঠা, সর ভাজা, পানতোয়া,নারিকেলের সিদ্ধ পুলি ও ক্ষীর লুচি। এসব পিঠা ১৫ টাকা থেকে ৪০ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি করা হয়। শহরের অনেক দোকানে এখন শীতের পিঠা কিনতে পাওয়া যায়। ব্যস্ত জীবনে পিঠা তৈরি করা বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার হলেও শহরের বেশ কিছু জায়গায় গড়ে উঠেছে ভ্রাম্যমান পিঠাঘর।