মাহমুদ আহসান হাবিব, চিলাহাটি ওয়েব ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁওয়ে চোখ রাঙিয়ে ব্যাপক আকার ধারন করেছে চিকেন পক্স বা জল বসন্ত। প্রতি বছর শীতের শেষ আর বসন্তের শুরু, এই সন্ধিক্ষণেই দেখা মেলে এ রোগের। তবে এ বছর যেন চিকেন পক্সের পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হতে শুরু করেছে ঠাকুরগাঁওয়ে।
জেলার হরিপুর ও রাণীশংকর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা গুলিতে ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে চিকেন পক্স বা জল বসন্ত রোগের। চলতি বছরের মার্চের মাঝামাঝি সময়ে চিকেন পক্স বা জল বসন্তে আক্রান্ত হয়ে অনেকেই ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালে। সাম্প্রতিক কালে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই আতঙ্ক বাড়ছে। চিন্তিত চিকিৎসক মহলও। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে, এ বছর চিকেন পক্সে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন বয়স্ক ও শিশুরা। চিকিৎসা বিভাগ বলছে তিন সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে এ রোগের ধরন নির্ণয় করা হবে।
আক্রান্ত রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা প্রদানে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার বনগাঁ ও কিসমত গ্রামে এবং রাণীশংকল উপজেলার ধর্মঘট ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে এ রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে ব্যাপক হারে। শরীরে পানি সহ গুটি গুটি র্যাসের দেখা যায়, সাথে থাকে জ্বর আর তীব্র শরীর ব্যথা। এমনই উপসর্গ চিকেন পক্সের।
ইতিমধ্যে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে হরিপুর উপজেলার কিসমত গ্রামের আমিনুল রহমান এমিলিক (৩২) ও এসান উল্লাহ (৩০) নামে দুজনের মৃত্যু হয়েছে । গ্রামগুলোতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে বাধা দেয়া থেকে শুরু করে লুকিয়ে পড়ছে আক্রান্ত ব্যক্তিরাও । আক্রান্ত অনেকেই হাসপাতালে না গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে কবিরাজ ও ঝাড়ফুঁকের ।
এ রোগে আক্রান্ত রোগী জেসমিন আক্তার জানান, আমি আজ এক সপ্তাহ ধরেই আক্রান্ত। আমাদের গ্রামের ২ জন সহ পাশের গ্রামের আরো ২ জনের মৃত্যুর খবর শুনেছি। আমার ভিশন ভয় করছে। এমনিতেই শরীরে ভিশন ব্যাথা অনুভব করছি এবং কোন ধরনের খাবার খেতে পারছিনা।
হরিপুর উপজেলার স্থানীয় হোমিও চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম জানান যে প্রতিদিনই ১২ থেকে ২০ জন চিকেন পক্সের রোগি উঠে আসছে। ঔষধের পাশাপাশি তরল খাবার ও পানীয় গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
হরিপুর উপজেলার বনগাঁ এলাকার সাবেক মেম্বার আবুল কাশেম জানান, আগেও আমাদের এ এলাকায় এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে লোকজন। তবে এবার যে হারে এর প্রকোপ দেখা গিয়েছে আর যেভাবে মৃত্যুর ঘঁনা ঘটছে তাতে আমরা সবাই বেশ ভয়ের মাঝেই আছি।
কেন হঠাৎ মাথাচাড়া দিয়ে উঠল চিকেন পক্স? এ সংক্রান্ত কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ঠাকুরগাঁওয়ের সিভিল সার্জন মোহাম্মদ নুর নেওয়াজকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা গ্রামে গিয়ে পরিদর্শণ করে এ রোগের ধরন নির্নয় করে দ্রুত রিপোর্ট দাখিল করবে।
এছাড়াও ওই ওলাকার আরএমও থেকে শুরু করে সকল চিকিৎসক যেনো পিপিই ব্যবহার করেই রোগিদের কাছে যায় এবং চিকিৎসা চালিয়ে যায় সে বিষয়েও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।