আপেল বসুনীয়া, চিলাহাটি ওয়েব : আগে ক্ষেত খামারে শ্রমিকের কাজ করতাম। পরচুলা তৈরীর কাজের কথা শুনে সেখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে পরচুলা তৈরীর কাজ করি। রোদ বৃষ্টিতে ভিজে মাঠে শ্রমিকের কাজ করতে খুবই কষ্ট হয়। এখন ঘরে বসে কাজ করছি। তিনি আরো বলেন, নতুন শিখেছি তাই মজুরি কম পাচ্ছি। কিন্তু তাতেও ভালো কারন মাঠে কাজ করতে অনেক সমস্যা হয়। তাছাড়া মাঠে প্রতিদিন কাজ পাওয়া যেতোনা। বেশির ভাগ দিন বসে থাকতে হয়। এখন প্রতিদিন কাজ করতে পারছি। এতে তিনি অনেকটাই স্বাচ্ছন্দবোধ করছেন। কথাগুলো চিলাহাটি ওয়েব ডটকমকে বলেন পরচুলা তৈরী করতে আসা বামুনিয়া ইউনিয়নের বারবিশা বামুনিয়া গ্রামের মানু রায়ের স্ত্রী শারতী রানী(২৫)। তার মতো অনেকে এসেছেন পরচুলা তৈরীর কাজে। পরচুলা তৈরী করে নীলফামারীর ডোমারে স্বাবলম্বী হয়েছেন হাজারো বেকার নারী।
নীলফামারী জেলায় পরচুলা তৈরীর কাজে সম্পৃক্ত রয়েছেন লক্ষাধিক নারী। বামুনিয়া ইউনিয়নের সাগর মেম্বারের মোড়ে গ্রামের ওই নারীদের পরচুলা তৈরীতে সহায়তা করছেন সুবর্ণ ট্রেডার্স প্রসেসিং নামের একটি প্রতিষ্ঠান। শুধু এই একটি প্রতিষ্ঠান থেকে জেলার ডোমার,ডিমলা, জলঢাকা ও নীলফামারী সদর উপজেলায় ১৪টি ইউনিটে কাজ করছেন ৪হাজার মহিলা। পরচুলা তৈরী করে বেকার নারীর কর্মসংস্থান হয়েছে এসব নারীর। নারীদের তৈরী করা এসব পরচুলা রপ্তানি করা হচ্ছে চীনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে।
শারতী রানীর মতো পরচুলা তৈরী করতে আসা অপর নারী শৈবা রানী, লক্ষীরানী, পবিত্রা রানী জানায়, আগে বাড়িতে বসে ঘর সংসারের কাজ করতাম এখন পরচুলা তৈরী করে বাড়তি আয় করছি। এতে সংসারের কিছুটা হলেও সহায়তা হচ্ছে। বামুনিয়া ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার সাগর চন্দ্র রায় চিলাহাটি ওয়েব ডটকমকে বলেন, আমার একটি গোডাউন ঘরে ১০০জন মহিলাকে নিয়ে একটি ইউনিটে পরচুলা তৈরীর কাজ চলছে। এলাকার অসহায় মহিলারা সেখানে কাজ করে স্বাবলম্বী হচ্ছে। এতেকরে কিছুটা হলেও এলাকাবাসীর আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।
সুবর্ণ ট্রেডার্স হেয়ার প্রসেসিং পরচুলা তৈরীর ওই ইউনিট পরিচালনাকারী মিলন চন্দ্র রায় জানান, ৪টি উপজেলায় ১৪টি ইউনিটের মাধ্যমে কাজ করছেন ৪হাজার মহিলা। আমি নীলফামারী উত্তরা ইপিজেডে এভার গ্রীন কোম্পানিতে কাজ করতাম। ২০২১ সালে চীনা কোম্পানির সাথে আলোচনা করে পরচুলা তৈরীর কাজ শুরু করি। এসব ইউনিটে কয়েক ধরনের ক্যাপ তৈরী করা হয়।
এসব ক্যাপ তৈরীতে একজন নারী প্রকারভেদে ৩০০থেকে ১২০০টাকা মজুরি পেয়ে থাকে। তিনি আরো জানান অনেক নারী এখান থেকে চুল এবং অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে নিজ বাড়িতে বসেসাংসারিক কাজের ফাঁকে পরচুলা তৈরী করে অর্থ উপার্জন করছে।