চিলাহাটি ওয়েব, বিনোদন ডেস্ক : নাটক-সিনেমায় আঞ্চলিক ভাষার প্রভাব রয়েছে, তবে শতভাগ আঞ্চলিক ভাষা-সংস্কৃতির কাজের বড্ড অভাব। একইভাবে রাজধানীর বাইরে সিনেমা হলের সংখ্যাও নামমাত্র এবং দর্শকবান্ধব নয়। এবার এই দুটো বিষয়ের অভূতপূর্ব মেলবন্ধন ঘটতে যাচ্ছে সুমদ্রকন্যা চট্টগ্রামে। প্রথমবারের মতো ঢাকার বাইরে শাখা খুললো দেশের অভিজাত মাল্টিপ্লেক্স চেইন স্টার সিনেপ্লেক্স। চট্টগ্রাম শহরের চকবাজার এলাকায় (নবাব সিরাজ উদ্দিন রোড) বালি আর্কেড শপিং কমপ্লেক্সে অবস্থিত সুপরিসর এই মাল্টিপ্লেক্সের রয়েছে তিনটি অভিজাত হল। যার আসন সংখ্যা যথাক্রমে ৮৬ (হল-১), ১৯৬ (হল-২) এবং ১২৫ (হল-৩)টি। শনিবার থেকেই দর্শকরা এই মাল্টিপ্লেক্সে সিনেমা উপভোগ করতে পারবেন। মাল্টিপ্লেক্সটির শুরুটা হচ্ছে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় নির্মিত দুটি সিনেমার মধ্য দিয়ে। এর একটি স্টার সিনেপ্লেক্স প্রযোজিত আলোচিত সিনেমা ‘ন ডরাই’। তানিম রহমান অংশু পরিচালিত ছবিটি ২০১৯ সালের ২৯ নভেম্বর মুক্তি পায়। যা ৪৪তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রসহ ৬টি বিভাগে পুরস্কৃত হয়। ছবিটির মুখ্য দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন শরিফুল রাজ ও সুনেরাহ। অন্য ছবিটি সদ্য মুক্তি পাওয়া ইমরাউল রাফাত পরিচালিত ‘মেইড ইন চিটাগং’। এর মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন পার্থ বড়ুয়া ও অপর্ণা ঘোষ। স্টার সিনেপ্লেক্সের চেয়ারম্যান মাহবুব রহমান রুহেল বলেন, ‘‘তিনটা ছবির মাধ্যমে আমাদের চট্টগ্রাম শাখার তিনটি স্ক্রিন চালু হচ্ছে। আনন্দের বিষয় এরমধ্যে দুটি ছবিই হচ্ছে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় নির্মিত। একটা আমাদের প্রযোজিত ‘ন ডরাই’, দ্বিতীয়টি চট্টগ্রামের ভাষা-সংস্কৃতি নিয়ে নির্মিত ‘মেইড ইন চিটাগং’। আরেকটা হলো হলিউডের ‘ব্ল্যাক প্যান্থার ওয়াকান্ডা ফরএভার’। যার যার পছন্দমতো ছবিগুলো উপভোগ করতে পারবেন।’’ গত শুক্রবার চট্টগ্রামের অভিজাত মাল্টিপ্লেক্স স্টার সিনেপ্লেক্সের নতুন শাখা উদ্বোধনের সময় এমনটাই জানান রুহেল। জমকালো এই উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। আরও ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বালি আর্কিডের মালিক সোলায়মান শেঠ এবং তারকা অতিথি হিসেবে ঢাকা থেকে উড়ে এলেন তারকা দম্পতি রাজ-পরীসহ অনেকেই। বরাবরের মত নান্দনিক পরিবেশ, সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত সাউন্ড সিস্টেম, জায়ান্ট স্ক্রিনসহ বিশ্বমানের সিনেমা হলের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা নিয়ে হলগুলো নির্মিত হয়েছে বলে জানান স্টার সিনেপ্লেক্সের চেয়ারম্যান মাহবুব রহমান রুহেল। রুহেল বলেন, ‘শুধু হলিউডের ওপর আমরা নির্ভরশীল থাকতে চাই না। দেশেও ভালো ছবি হওয়া দরকার। সামনে কিন্তু তেমন কোনো দেশিয় ছবি নেই। তাই আমি চাই সংশ্লিষ্টরা এদিকে নজর দেবেন। আমরা একশ সিনেমা হল করার ঘোষণা দিয়েছি। মনে হচ্ছে সেটার দিকে অনেকটা এগিয়ে গেছি। চট্টগ্রামের পর রাজশাহী, কুমিল্লাসহ অন্যান্য জেলায় শাখা চালু হবে আমাদের। এটার সঙ্গে এখন দরকার ভালো ভালো ছবি। আমরা ছবি নির্মাণের প্রস্তুতিও নিচ্ছি। কিন্তু এই কাজগুলো একার নয়, সবার।’উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ৮ অক্টোবর রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে যাত্রা করে দেশের প্রথম মাল্টিপ্লেক্স সিনেমা হল ‘স্টার সিনেপ্লেক্স’। বর্তমানে ঢাকায় ৫টি শাখা রয়েছে এর। ধানমন্ডির সীমান্ত সম্ভার (সাবেক রাইফেলস স্কয়ার), মহাখালীর এসকেএস (সেনা কল্যাণ সংস্থা) টাওয়ার, মিরপুরের সনি স্কয়ার এবং বিজয় স্মরণি সামরিক জাদুঘরে শাখাগুলো অবস্থিত। এ ছাড়া বগুড়া ও রাজশাহীতে নতুন শাখার নির্মাণ কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।