Showing posts with label আন্তর্জাতিক. Show all posts
Showing posts with label আন্তর্জাতিক. Show all posts

যুক্তরাজ্য প্রবাসী কবি লুৎফুর রহমান চৌধুরীকে সম্মাননা প্রদান

চিলাহাটি ওয়েব ডটকম : Thursday, May 25, 2023 | 5/25/2023 12:31:00 AM

বিশেষ প্রতিনিধি : নবীগঞ্জ পৌর কর্তৃপক্ষ ১৯মে/২৩ রোজ শুক্রবার বিকেল ৩ ঘটিকায় পৌরসভার সভাকক্ষে মেয়র আলহাজ্ব ছাবির আহমদ চৌধুরী কর্তৃক যুক্তরাজ্য গমন উপলক্ষে নবীগঞ্জের কবি মহল এক হৃদ্ধিক সভার আয়োজন করা হয়। সভায় যুক্তরাজ্য অবস্থানরত বাংলাদেশী নাগরিক বিশিষ্ট কবি লুৎফুর রহমান চৌধুরী রাকিবকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। 
কবি বলেন ভালোবেসে বুকে টেনে নিয়ে সুবাসিত গোলাপ মেয়র ছাবির আহমদ সহ নবীগঞ্জের কবি মহল এক পবিত্র বন্ধনে আবব্দ করে গেঁথে তৈরী করেছেন সুন্দর একটি মালা। সেই মালার অনেক ভারী। সেই মালার যতাযত মূল্যায়ন দিতে পারলেই নিজের জীবন সার্থক মনে করবো। সবাই দোয়া করবেন আপনাদের ভালোবাসা বাক্সটি যেন হৃদয়ের গভীরে যতন করে রাখতে পারি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কবি আফতাব আল মাহমুদ, গীতিকার আলী আমজাদ মিলন ও নবীগঞ্জ ইসলামী সাহিত্য পরিষদের সভাপতি কাজী এম হাসান আলী। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন নবীগঞ্জ পৌর আইডিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক আশীষ কুমার বিশ্বাস, বক্তব্য রাখেন নবীগঞ্জ উপজেলা স্কুলের অধ্যক্ষ কাঞ্চন বণিক, আনন্দ নিকেতনের সাবেক সভাপতি প্রণব চন্দ্র দেব, কারখানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর বখত চৌধুরী তুহিন, মোঃ আবুল কালাম মিঠু প্রমুখ। 
কবি পৃথ্বীশ চক্রবর্ত্তী'র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন নহরপুর শাহজালাল মাদ্রাসার শিক্ষক ইব্রাহিম ইউসুফ এবং পবিত্র গীতাপাঠ করেন কবি নয়ন দাশ। স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন গীতিকবি গোপাল রায়, কবি মোহাম্মদ আলী বাহার, ইব্রাহীম ইউসুফ প্রমুখ। এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান শিক্ষক কবি এম এ ওয়াহিদ লাভলু, মাওঃ ফয়সাল তালুকদার, ওয়াহিদুজ্জামান জুয়েল, মো. সাহেদুর রহমান, পৌর আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষক রতন কিশোর রায়, সুকান্ত দাশ ও হিরক রায়, প্রমতেশ কুমার দেব, মাওঃ আবুল হোসাইন, মোঃআশরাফুল ইসলাম বাবলু, মনোয়ার হোসেন আবদাল, জি. আর. এম জাহাঙ্গীর শাহ, আবু মিয়া প্রমুখ। অনুষ্ঠান শেষে বিশিষ্ট কবি লুৎফুর রহমান চৌধুরী রাকিব এর হাতে শুভেচ্ছা স্মারক তুলে দেন নবীগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচিত মেয়র আলহাজ্ব ছাবির আহমদ চৌধুরী। এসময় কবি আবেগে আল্পুত হয়ে অশ্রুসজল চোখে বিশিষ্ট কবি লুৎফুর রহমান চৌধুরী রাকিব পৌরসভার স্বনামধন্য মেয়র আলহাজ্ব ছাবির আহমদ চৌধুরী সহ নবীগঞ্জের কবি মহল আমাকে এক পবিত্র ভালোবাসা দিয়ে সম্মানিত করায় আমি পৌর কর্তৃপক্ষ কবি মহল সবাইকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্য অবস্থানরত বাংলাদেশী নাগরিক বিশিষ্ট কবি লুৎফুর রহমান চৌধুরী রাকিব দিনাজপুর থেকে প্রকাশিত দৈনিক মানব বার্তা পত্রিকার কবতিার আসরে একজন নিয়মিত লেখক।

সৌদিতে ঈদ হতে পারে ২২ এপ্রিল

চিলাহাটি ওয়েব ডটকম : Tuesday, April 18, 2023 | 4/18/2023 02:15:00 AM

চিলাহাটি ওয়েব, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে আগামী বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখার তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই। ফলে, এ বছর ৩০ রোজা পূরণ করেই শেষ হতে পারে রমজান মাস। সেটি হলে এসব দেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে আগামী শনিবার (২২ এপ্রিল)।
সোমবার ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রনমিক্যাল সেন্টারের (আইএসি) বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে সৌদি গ্যাজেট। আবুধাবি-ভিত্তিক সংস্থাটি টুইটারে এক বিবৃতিতে বলেছে, জ্যোতির্বিজ্ঞানের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তারা এই ভবিষ্যদ্বাণী দিয়েছে এবং ঈদের সঠিক তারিখ কেবল নতুন চাঁদ দেখার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষই নিশ্চিত করবে।
আইএসি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আরব দেশগুলোসহ মুসলিম বিশ্বের কোথাও খালি চোখে ঈদের চাঁদ দেখার সম্ভবনা নেই বললেই চলে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার মুসলিম বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে খালি চোখে এবং আরব দেশগুলোতে টেলিস্কোপ ছাড়া শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা অসম্ভব হতে পারে। এ কারণে শনিবার হতে পারে ঈদুল ফিতর। তবে বৃহস্পতিবার লিবিয়া থেকে শুরু করে পশ্চিম আফ্রিকার কয়েকটি দেশে চাঁদ দেখা যেতে পারে।
জ্যোতির্বিজ্ঞান সংস্থাটি বলেছে, চাঁদ দেখার বিষয়টি খুবই কঠিন এবং এর জন্য নির্ভুল টেলিস্কোপ, পেশাদার পর্যবেক্ষক ও ব্যতিক্রমী আবহাওয়ার প্রয়োজন হয়। তবে এসব উপকরণের সংমিশ্রণ খুব কমই ঘটে। এ কারণে আরব বিশ্বের কোনো দেশ থেকে টেলিস্কোপ ব্যবহার করেও বৃহস্পতিবার ঈদের চাঁদ দেখা যাবে বলে আশা করা যায় না।
আইএসির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসলামী বিশ্বের অধিকাংশ দেশ আগামী শুক্রবার শাওয়াল মাস শুরুর ঘোষণা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে, এসব দেশের মুসলিমরা ৩০ দিন রোজা রাখার পর আগামী শনিবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

চিলাহাটি সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের সৌজন্য সাক্ষাৎ

চিলাহাটি ওয়েব ডটকম : Tuesday, January 10, 2023 | 1/10/2023 04:38:00 PM

আপেল বসুনীয়া, চিলাহাটি ওয়েব : নীলফামারী জেলার চিলাহাটি সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
আজ মঙ্গলবার সকালে চিলাহাটির ডাঙ্গাপাড়া সীমান্তের ৭৮২/১এস শূন্যরেখায় এ সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ৫৬ বিজিবির নীলফামারী ব্যাটালিয়ানের পরিচালক ও অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আসাদুজ্জামান হাকিম, চিলাহাটি কোম্পানি হেড কোয়ার্টার্স সুবেদার মোহাম্মদ আব্দুল ওয়ারেছ। অপরদিকে ভারতীয় ১৫ বিএসএফের কমান্ডেট শ্রী অরুপ কুমার উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমানবন্দর নির্মাণ করছে সৌদি আরব

চিলাহাটি ওয়েব ডটকম : Monday, December 5, 2022 | 12/05/2022 04:24:00 PM

চিলাহাটি ওয়েব, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নিজেদের রেকর্ড নিজেরাই ভাঙছে সৌদি আরব। দাম্মামে অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তম বিমানবন্দর কিং খালিদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের চেয়েও বড় আরেকটি বিমানবন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা করছেন সৌদি প্রধানমন্ত্রী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।
রাজধানী রিয়াদের ২২ বর্গমাইলজুড়ে নির্মিত হবে কিং সালমান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট। আন্তর্জাতিক এই বিমানবন্দরে ছয়টি সমান্তরাল রানওয়ে থাকবে। সৌদি আরবের তেলবহির্ভূত মোট দেশজ উৎপাদনে বার্ষিক ৭.১৮ বিলিয়ন ডলার অবদান রাখবে এই প্রকল্প বলে আশা করা হচ্ছে।
স্থাপত্যশৈলী জগতের খ্যাতিসম্পন্ন ‘ফস্টার + পার্টনারস’খ্যাত ব্রিটিশ স্থাপত্য, প্রকৌশল দ্বারা নকশা করা হয়েছে। ‘স্টুডিওর ফস্টার + পার্টনার্সের’ প্রধান লুক ফক্স বলেন, ‘বিমানবন্দরটি ঐতিহ্যবাহী টার্মিনালকে একটি একক ‘কনকোর্স লুপ’ হিসাবে আবারও কল্পনা করবে, যা পরিবেশিত হবে একাধিক প্রবেশদ্বারে মধ্য দিয়ে।’ ৪.৫ বর্গমাইলের বেশি ছোট আউটলেট, আবাসিক এবং বিনোদনমূলক সুবিধা এবং লজিস্টিক স্পেস থাকবে।
২০৩০ সালের মধ্যে বিমানবন্দরটি বছরে ১২০ মিলিয়ন যাত্রী বহন করার জন্য প্রস্তুত হবে। পরবর্তী দুই দশকে যার পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে ৫০ শতাংশ। ২০৫০ সালের মধ্যে প্রতিবছর ৩.৫ মিলিয়ন টন কার্গো পরিচালনা করার পরিকল্পনাও রয়েছে। ‘ফস্টার + পার্টনারসের’ একজন সিনিয়র অংশীদার সেফ এ বাহা এলদিন একটি বিবৃতিতে বলেন, বিমানবন্দরের লক্ষ্য হলো রিয়াদকে ‘সৃজনশীলতা এবং উদ্বাবনের গ্লোবাল হাব’ হয়ে উঠতে সহায়তা করা। পর্যটন খাতে ধারাবাহিক উন্নয়ন অব্যাহত রেখে যাচ্ছে সৌদি আরব। সেসব বৃহৎ প্রকল্পেরই একটি এই বিমানবন্দর।  সূত্র : সিএনএন

বিশ্ববাজারে কমেছে জ্বালানি তেলের দাম

চিলাহাটি ওয়েব ডটকম : Thursday, November 24, 2022 | 11/24/2022 08:08:00 PM

চিলাহাটি ওয়েব, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। সরবরাহ ব্যবস্থায় উদ্বেগ দূর হওয়ায় তেলের দাম এমন নিম্নমুখী। কারণ গ্রুপ অব সেভেন বা জি-৭ দেশগুলোর রাশিয়ান তেলের মূল্য নির্ধারণের জন্য প্রস্তাবিত রেঞ্জ বা সীমা বর্তমান বাণিজ্য স্তরের চেয়ে বেশি। খবর রয়টার্সের।
বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) বিকেলের দিকে দেখা গেছে, ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেল প্রতি ৫০ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ কমে ৮৪ দশমিক ৯১ ডলারে দাঁড়িয়েছে। ইউএস ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের দাম ব্যারেলপ্রতি ৪৬ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ কমে ৭৭ দশমিক ৪৮ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
রাশিয়ার তেলের ওপর মূল্যসীমা বর্তমান মাত্রার চেয়ে বেশি হতে যাচ্ছে এমন খবর প্রকাশের পর বুধবার (২৩ নভেম্বর) দুই বেঞ্চমার্কের দামই ৩ শতাংশ কমে যায়।
ইউরোপীয় একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জি-৭ রাশিয়ান সমুদ্রজাত তেলের মূল্য ব্যারেলপ্রতি ৬৫ থেকে ৭০ ডলারের মধ্য নির্ধারণ করতে চাচ্ছে। যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সরকারগুলো এখনো দামের বিষয়ে একমত হয়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়ার তেলের জন্য যে মূল্যসীমা বেঁধে দেওয়া হবে তা যদি বর্তমানের চেয়ে বেশি হয় তাহলে রাশিয়া তেল বিক্রি স্বাভাবিক রাখবে। এতে সরবরাহ সংকটের ঝুঁকি কমে যাবে।
কমনওয়েলথ ব্যাংকের পণ্য বিশ্লেষক বিবেক ধর বলেছেন, মূল্যসীমাটি বাজারের প্রত্যাশার চেয়েও বেশি হবে, যা বিশ্বব্যাপী সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস করবে।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, কিছু ভারতীয় ও চীনা পরিশোধক ইউরাল ক্রুডের প্রস্তাবিত মূল্যসীমার নিচে দাম দিচ্ছে। রাশিয়ার ক্রুড অয়েল ইউরাল নামে পরিচিত।

সৌদির কাছে হার দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু আর্জেন্টিনার

চিলাহাটি ওয়েব ডটকম : Tuesday, November 22, 2022 | 11/22/2022 10:26:00 PM

চিলাহাটি ওয়েব, স্পোর্টস ডেস্ক : হারের স্বাদ ভুলতে বসা আর্জেন্টিনাকে যেন এক ঝটকায় মাটিয়ে নামিয়ে আনল সৌদি আরব। লিওনেল মেসির রেকর্ড গড়া গোলে শুরুটা প্রত্যাশিতই হয় লিওনেল স্কালোনির ‘অজেয়’ দলের। প্রথমার্ধে আরও তিনবার জালে বল পাঠায় তারা; কিন্তু সবগুলো আটকে যায় অফসাইডের ফাঁদে। এরপরই বিস্ময় হয়ে ধরা দেয় সৌদি আরব। পাঁচ মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের স্তব্ধ করে দিল এশিয়ার দেশটি।
লুসাইল স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার ‘সি’ গ্রুপের ম্যাচে সবাইকে অবাক করে দিয়ে ২-১ গোলে জয় তুলে নেয় সৌদি আরব। ৩৬ ম্যাচ পর হারের তেতো স্বাদ পেল আর্জেন্টিনা। এতে তাদের দ্বিতীয় রাউন্ডের পথটা হয়ে গেল কঠিন। দ্বিতীয়ার্ধে গতিময় ফুটবলে বাজিমাত করে সৌদি আরব। অবশ্য কোপা আমেরিকার বর্তমান চ্যাম্পিয়নরাও শুরুর দাপট ধরে রাখতে পারেনি পরের অর্ধে। হতাশাজনক ফুটবলে ১৯৭৪ সালের পর প্রথমবার বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ২ গোল হজম করল আর্জেন্টিনা। ডিফেন্স অনেক উপরে এনে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়েছিল সৌদি আরব। আনহেল দি মারিয়া-লাউতারো মার্তিনেসরা অফসাইড ফাঁদ এড়াতে পারেনি। এগিয়ে যাওয়ার পর সৌদি আরব রক্ষণও সামাল দিয়েছে দারুণ দৃঢ়তায়।
আক্রমণাত্মক শুরুর পর দ্বিতীয় মিনিটেই গোলের জন্য প্রথম শট নেন মেসি। দূরের পোস্ট লক্ষ্য করে নেওয়া শট যতটা বাঁকাতে চেয়েছিলেন ততটা পারেননি। ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন মোহামেদ আল-ওয়াইস। দশম মিনিটে ঠাণ্ডা মাথার স্পট কিকে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে নেন মেসি। একদিকে ডাইভ দেওয়ার ভান করে আগেভাগেই আরেক দিকে ঝাঁপিয়ে পড়েন সৌদি গোলরক্ষক। গড়ানো শটে পোস্ট ঘেঁষে বল জালে পাঠান আর্জেন্টিনা অধিনায়ক। বিশ্বকাপে তার সপ্তম গোল। এই গোলে একটি কীর্তিও গড়া হয়ে গেল মেসির।
দেশের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপের চারটি ভিন্ন আসরে গোল করলেন তিনি। এই নিয়ে সবশেষ ৫ ম্যাচে মেসির গোল হলো ১১টি, জাতীয় দলের হয়ে সব মিলিয়ে ৯২টি। কর্নারের সময়ে ডি-বক্সে সৌদি আরবের একজন ফাউল করায় ভিএআর দেখে পেনাল্টি দিয়েছিলেন রেফারি।
শুরুতেই পিছিয়ে পড়া সৌদি আরব জবাব দেয় আক্রমণাত্মক ফুটবলে। প্রতি-আক্রমণ থেকে ২২তম মিনিটে আবার জালে বল পাঠান মেসি। তবে তিনি নিজেই অফসাইডে থাকায় গোল মেলেনি। পাঁচ মিনিট পর জালে বল পাঠান মার্তিনেস। এবার ভিএআরের সহায়তা নিয়ে অফসাইডের বাঁশি বাজান রেফারি। অফসাইডের ফাঁদ কেটে বের হতেই পারল না আর্জেন্টিনা।
৩৫তম মিনিটে ফের জালে বল পাঠান মার্তিনেস। এবার অবশ্য আগেভাগেই পতাকা তোলেন লাইন্সম্যান। অফসাইডের কথা চিন্তা করেই কি-না আক্রমণভাগের খেলোয়াড়রা একটু নিচে নেমে থাকায় এরপর ধার কিছুটা কমে যায় আর্জেন্টিনার। বল নিয়ন্ত্রণে রেখে চেষ্টা চালিয়ে যায় স্কালোনির দল। কিন্তু প্রথমার্ধে আর জালের দেখা পায়নি তারা। প্রথমার্ধে লক্ষ্যে একটিও শট রাখতে না পারা সৌদি আরব ৪৮তম মিনিটে সমতা ফেরায়।
ডি-বক্সে বল পেয়ে আড়াআড়ি শট নেন সালেহ আল শেহরি। স্লাইড করা ক্রিস্তিয়ান রোমেরোর পায়ে লেগে দূরের পোস্ট ছুঁয়ে বল জড়ায় জালে! ওই ধাক্কা সামাল দেওয়ার আগেই ৫৩তম মিনিটে পিছিয়ে পড়ে আর্জেন্টিনা। বেশ কিছুক্ষণ আর্জেন্টিনার রক্ষণেই ছিল বল। কেউই ক্লিয়ার করতে পারেননি। ডি-বক্সের মাথায় আলগা বল পেয়ে যান যান সেলিম আল দাওয়াসারি। তিন জনকে কাটিয়ে বুলেট গতির শটে সৌদি আরবকে এগিয়ে নেন তিনি।
৬৩তম মিনিটে সমতা ফেরানোর দারুণ সুযোগ একটুর জন্য কাজে লাগাতে পারেননি মার্তিনেস। দুর্দান্ত ক্রসে মাথা ছোঁয়াতে পারেননি ইন্টার মিলান স্ট্রাইকার। পরের মিনিটে গোললাইন থেকে কোনোমতে কর্নারের বিনিময়ে একটি চেষ্টা ব্যর্থ করে দেন সৌদি গোলরক্ষক। ৭২তম মিনিটে দুরূহ কোণ থেকে গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে পারেননি দি মারিয়া। নষ্ট হয় আরেকটি মরিয়া চেষ্টা। দুই মিনিট পর ডি-বক্সের বাইরে এসে দারুণ স্লাইডে সম্ভাব্য একটি আক্রমণ আগেভাগেই শেষ করে দেন সৌদি গোলরক্ষক।
৮৪তম মিনিটে দি মারিয়ার ক্রসে সুযোগ আসে মেসির সামনে। আর্জেন্টিনা অধিনায়কের হেডে খুব জোর না থাকায় কোনো বিপদ ঘটাতে পারেনি। শেষের দিকে একের পর এক আক্রমণ করে লাতিন আমেরিকার দলটি। কিন্তু কোনো না কোনোভাবে সেগুলো ঠেকিয়ে দেয় সৌদি রক্ষণ। যোগ করা সময়ের দশম মিনিটে হুলিয়ান আলভারেসের দারুণ হেড ঝাঁপিয়ে ফেরান গোলরক্ষক।
অবিশ্বাস্য এক জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সৌদি আরব। ৩৬ বছরের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসানের অভিযানে এসে প্রথম ম্যাচেই থামল আর্জেন্টিনার জয়রথ। রূপকথার এক জয়ে ‘সি’ গ্রুপের লড়াই দারুণ জমিয়ে দিল সৌদি আরব। 

হারিয়ে যাবে তাজমহল?

চিলাহাটি ওয়েব, আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তাজমহলে শুভ্র-সুন্দর রূপ হারিয়ে যাচ্ছে। সাদা মার্বেলে লেগেছে সবুজ ও হলদে ছোপ। মার্বেলের রং বদলে যাচ্ছে। ঝুঁকিতে তাজমহলের চারপাশের পরিবেশ। অন্যদিকে, যে যমুনা নদীর পানিতে তাজমহলের অপরূপ প্রতিবিম্ব দেখা যেত, সেই নদী দিন দিন শুকিয়ে যাচ্ছে। সমস্যা তৈরি করছে যমুনা নদীর দূষিত পানি। এভাবে নানা সমস্যার আবর্তে পড়ে দুর্বল হয়ে পড়ছে তাজমহলের ভিতও। যেকোনো সময় বিস্ময়কর এই সমাধি দেবে যেতে পারে। এমন মতামত বিশেষজ্ঞদের।
তাজমহল নির্মাণের পর ৩৫০ বছরের বেশি সময় কেটে গেছে। এই মুঘল কীর্তি এখন ভারতের জাতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ। স্থাপত্যশৈলী আর চোখধাঁধানো কারুকাজের জন্য এর আবেদন সর্বজনীন। গত শতাব্দীর শেষভাগ থেকে তাজমহলের ভবিষ্যৎ নিয়ে আদালতে বিচার-বিশ্লেষণ হচ্ছে। আদালত ধারাবাহিকভাবে নানা নিয়মকানুন চালুর নির্দেশ দিয়েছেন এবং এখনো দিচ্ছেন। আদালতের উষ্মা, সরকারি রক্ষণাবেক্ষণ প্রতিষ্ঠান ও সরকার নিজে তাজমহলকে রক্ষার জন্য যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না। যদিও সরকারের বক্তব্য, সাধ্যমতো সবই করা হচ্ছে। তাজমহলে সমস্যা কী? অনেক। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাজমহলে শুভ্র-সুন্দর রূপ হারিয়ে যাচ্ছে। সাদা মার্বেলে লাগছে সবুজ ও হলদে ছোপ। মার্বেলের রং বদলে যাচ্ছে। ঝুঁকিতে আছে তাজমহলের চারপাশের পরিবেশ। অন্যদিকে, যে যমুনা নদীর পানিতে তাজমহলের অপরূপ প্রতিবিম্ব দেখা যেত, সেই নদী দিন দিন শুকিয়ে যাচ্ছে। সমস্যা তৈরি করছে যমুনা নদীর দূষিত পানি। এই নানাবিধ সমস্যার প্রতিক্রিয়ায় দুর্বল হয়ে পড়ছে তাজমহলের ভিত্তিও। যেকোনো সময় নাকি মাটিতে দেবেও যেতে পারে মমতাজের এই সমাধিস্থল!
প্রায় ২২ বছরের মহাযজ্ঞ শেষে ১৬৫২ সালে শেষ হয় তাজমহলের নির্মাণকাজ। এই স্থাপনা নির্মাণে শ্রম দিয়েছেন ২০ হাজারের বেশি শ্রমিক। ঐতিহাসিকদের মতে, এই মুঘল স্থাপত্যে একাকার হয়েছে ভারত, পারস্য ও ইসলামি ধারা। তাজমহল তৈরিতে ইউরোপ ও অটোমান সাম্রাজ্য থেকেও শ্রমিকেরা এসেছিলেন। এসবের মিশেল হলো তাজমহল বা মমতাজ মহল। ১৯৮৩ সালের ইউনেসকো একে বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত করে।
মজার বিষয় হলো, বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হওয়ার সময় থেকেই তাজমহলের রক্ষণাবেক্ষণ আদালতে দৃষ্টিগোচরে আনা হয়েছিল। তখন থেকেই এই স্থাপনা নিয়ে নানা ধরনের গবেষণার সূত্রপাত। জানা গেছে, তাজমহল দিন দিন বিবর্ণ হচ্ছে। গত ৩৫ বছরে অবস্থা খারাপ বৈ ভালো হয়নি। সমস্যার প্রকৃতি ও উদ্ভবের কারণ নাটকীয়ভাবে বদলে গেছে। স্থপতি এ জি কৃষ্ণ মেননের মতে, তাজমহলের সমস্যা বেশ জটিল। তবে রোমের সিস্টাইন চ্যাপেল বা মিসরের পিরামিডও একই সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে। তাই পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তাজমহলকে পৌঁছে দিতে পুরো বিশ্বের সহায়তা প্রয়োজন ভারতের।   
 
সমস্যা কী কী?
বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিবেশদূষণের কারণেই তাজমহল আজ হুমকিতে। তবে এই পরিবেশদূষণ নানামাত্রিক। একটির চেয়ে আরেকটি বেশি ভয়ংকর। ভারতীয় সাময়িকী ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাজমহল যে যমুনা নদীর তীরে গড়ে তোলা হয়েছে, সেই নদীতে পানির পরিমাণ কমে গেছে। মুঘল আমলে স্থপতিরা কখনোই ভাবেননি, যমুনায় পানির প্রবাহ কমে যেতে পারে। এই ভাবনা মাথায় রেখে তাজমহলের স্থাপত্যে কোনো বদল আনা হয়নি। এখন তার ফলাফল নিয়ে দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে। তাজমহলের চারপাশে ১০-১২ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে রয়েছে আটটি ঘাট।
যমুনা নদীর তীরে গড়ে ওঠা এসব ঘাটে স্থানীয় অধিবাসীরা গোসল থেকে শুরু করে ধর্মীয় আচার—সবই করে থাকে। এ ছাড়া তাজমহল ও আগ্রা দুর্গের মধ্যে আছে শ্মশান। আবার ঘাটে মৃতদেহের সৎকারও করা হয়। এসব থেকে হয় কার্বন নিঃসরণ। সেটিও কমিয়ে দিচ্ছে তাজমহলের আয়ু। তবে বছর খানেক আগেই ভারতের সর্বোচ্চ আদালত এই শ্মশানঘাট সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে তা আর বাস্তবায়িত হয়নি। ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিদিন ঘাটগুলোয় প্রায় ১০০ মৃতদেহের সৎকার হয়। প্রতি সৎকারে প্রয়োজন হয় ৩০০ কেজি কাঠ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাজমহলে প্রভাব ফেলছে সুদূর রাজস্থানের মরুভূমি থেকে আসা ধুলা। আবার যমুনার তীরে অবৈধ বালু উত্তোলন চলছে। যমুনার পানিতে ভাসছে বর্জ্য পদার্থ ও প্লাস্টিক পণ্য। প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরিতে অবদান আছে আগ্রার অধিবাসী ও পর্যটকদেরও। শুধু আগ্রা শহরেই প্রতি মাসে ১৮০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হয়।
গবেষকেরা বলছেন, এই প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি করে মিথেন গ্যাস, যা তাজমহলের মার্বেলকে হলুদাভ করে দিচ্ছে। নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, বাতাসে থাকা কার্বন তাজমহলের মার্বেলের রং বদলে দিচ্ছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকা বলছে, আগ্রা বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় অষ্টম স্থানে রয়েছে। ২০১৫ সালে ভারতের সংসদে উপস্থাপিত সরকারি পর্যালোচনায় জানানো হয়, আগ্রার বায়ুদূষণ তাজমহলের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত করছে সাধারণ মানুষের জীবন। এই পর্যালোচনায় আরও বলা হয়, নিরীক্ষা ছাড়াই তাজমহলের আশপাশে গড়ে উঠছে নানা ধরনের স্থাপনা। এতেও তাজমহলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়া লিখেছে, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের চালানো যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, এই বায়ুদূষণের কারণেই তাজমহলের সাদা রঙের মার্বেলে বাদামি ও হলুদ ছোপ পড়ছে। তাজমহলের জন্য আরেক বিপদ এটি দেখতে আসা পর্যটকেরা। মূলত পর্যটকদের টিকিট বাবদ পাওয়া অর্থ দিয়েই তাজমহলের রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নকাজ করা হয়।
ইন্ডিয়া টুডে জানাচ্ছে, প্রতিদিন প্রায় ৪০ হাজার পর্যটক তাজমহল দেখতে আসেন। ছুটির দিনগুলোয় এই সংখ্যা দাঁড়ায় ৭০ হাজার পর্যন্ত। অথচ ভারতের ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের দেওয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুরো তাজমহলে পর্যটকের সংখ্যা কখনোই ১০ হাজারের বেশি হতে পারবে না। মূল সমাধিস্থলের কাছাকাছি পর্যন্ত যেতে পারেন পর্যটকেরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পর্যটকদের ভিড়ে মূল সমাধিস্থলটি আরও ভঙ্গুর হয়ে পড়ছে। মানুষের অত্যধিক ভিড়ের কারণে নোংরা হচ্ছে তাজমহলের মার্বেল, নষ্ট হচ্ছে সৌন্দর্য। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাজমহল থেকে প্রতিদিন প্রায় ১২ থেকে ২০ হাজার প্লাস্টিকের বোতল সরাতে হয়। এই বোতলগুলো পর্যটকদেরই অবদান!   
 
যমুনা মরলে তাজমহলও শেষ?
তাজমহল যখন নির্মাণ করা হয়েছিল, তখন সম্রাট শাহজাহান নিশ্চয়ই ভাবেননি যমুনা নদীর পানিতে কোনো দিন বর্জ্য ভাসবে! তবে কবিগুরু বলে গেছেন, ‘এ কথা জানিতে তুমি ভারত-ঈশ্বর শা-জাহান, কালস্রোতে ভেসে যায় জীবন যৌবন ধনমান।…’ ঠিক তেমনই হয়েছে। হিমালয় পর্বতমালার যমুনোত্রী হিমবাহ থেকে যমুনার উৎপত্তি। উৎপত্তিস্থলে যমুনার পানি স্বচ্ছ, টলটলে। অথচ হরিয়ানার হাথি কুণ্ড বাঁধ পার হওয়ার পরই নোংরা হতে থাকে যমুনার পানি। এই বাঁধে যমুনার মোট পানিপ্রবাহের ৯০ শতাংশের বেশি আটকে যায়। পানিপথ ও আগ্রার মাঝে রয়েছে অসংখ্য নর্দমা বা ড্রেন। এগুলো যমুনার পানিতে মেশায় দূষিত পানি। দিল্লিতে গিয়ে যমুনা আরও দূষিত হয়ে পড়ে। পয়োনিষ্কাশনের প্রায় ১৭টি ড্রেন যমুনায় উচ্ছিষ্ট ফেলে। আর আগ্রায় সেই ড্রেনের সংখ্যা দাঁড়ায় ৯০-এ। ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা মানববসতি, অবৈধ স্থাপনা, কলকারখানা—কেউই ছাড় দেয় না যমুনাকে।
গ্যাংটকের সিকিম ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক অনিল কুমার মিশ্র বলেন, তাজমহলের পাশ দিয়ে যখন যমুনা বয়ে যায়, তখন এর সঙ্গে নর্দমার কোনো তফাত থাকে না। আগ্রার সেইন্ট জনস কলেজের পতঙ্গবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গিরিশ মহেশ্বরী বলছেন, যমুনা নদীর পানির প্রকৃতি পরিবর্তন হয়ে যাওয়ায় সেখানকার পানিতে তৈরি শৈবাল তাজের মার্বেলে বাসা বাঁধছে। এটিই সাদা মার্বেলকে সবুজাভ বানানোর কারণ। এভাবে চলতে থাকলে তাজমহল পুরোপুরি সবুজ রঙের হয়ে যেতে পারে। আবার যমুনার দূষিত পানিতেই জন্ম নিচ্ছে নানা ধরনের কীটপতঙ্গ, যা তাজমহলে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। অন্যদিকে, তাজমহলের ভিত নিয়েও আছে সমস্যা।
তাজমহলের ভিত ঠিক কীভাবে তৈরি—সেই সম্পর্কে স্পষ্ট ও নিখুঁত তথ্য পাওয়া যায় না। বিভিন্ন নথিতে দেখা গেছে, তাজমহলের ভিত অনেকটা কাঠের বাক্সের মতো। পেশায় পুরপ্রকৌশলী ও তাজমহল নিয়ে গবেষণা চালানো অধ্যাপক এস সি হান্দা বলেন, কংক্রিট, চুন, পাথর প্রভৃতি উপাদান দিয়ে তাজের ভিত তৈরি করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। যমুনা নদীর অববাহিকা পর্যন্ত গেছে এই স্থাপনার ভিত। কিন্তু নদীতে পানিপ্রবাহ কমে যাওয়ায় এই ভিত ভঙ্গুর হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে করে মূল সমাধিস্তম্ভ মাটিতে দেবে যেতে পারে। অবশ্য তাজমহলের ভিত ক্ষয়ে যাওয়া নিয়ে বিতর্ক আছে।
আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া ও সেন্ট্রাল বিল্ডিংস রিসার্চ ইনস্টিটিউট বলছে, তাজমহলের ভিত নিয়ে এসব আশঙ্কা অমূলক।   কিসে রক্ষা? ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট সেই ১৯৮৪ সাল থেকেই তাজমহলের সংরক্ষণের বিষয়ে নানা ধরনের নির্দেশনা দিয়ে আসছেন। সেই অনুযায়ী বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করছে সরকার। অবশ্য আদালতের পর্যবেক্ষণ, সরকারি রক্ষণাবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো যথাযথ দায়িত্ব পালন করছে না।
ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে তাজমহল রক্ষার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে— 
 ১. তাজের রক্ষণাবেক্ষণে আরও মানুষ ও অর্থ বরাদ্দ করা। তিন বছর ধরে টিকিট বিক্রি করে তাজমহল যা আয় করছে, তার মাত্র ৮ শতাংশ এই স্থাপনার রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় করা হচ্ছে। এই খরচ বাড়ানো প্রয়োজন।
২. এই ঐতিহাসিক স্থাপনার কাছাকাছি থাকা শ্মশান ও ডিজেল জেনারেটর অন্যত্র সরাতে হবে।
৩. যমুনার তীরে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা ভেঙে ফেলতে হবে এবং এর তীরবর্তী বিভিন্ন শহরের পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা উন্নত করতে হবে। শহরের বর্জ্যে যমুনার পানি যেন দূষিত না হয়, সে জন্য শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। নদীর তীরে অবৈধ বালু উত্তোলনও বন্ধ করতে হবে।
৪. আগ্রা শহরে যেন প্রকাশ্যে বর্জ্য পদার্থ পোড়ানো না হয়, সেদিকে নজর দিতে হবে।
৫. নিয়মিত যমুনা নদীর পানির মান পরীক্ষা করতে হবে। নদীর পানি বিশুদ্ধ করার জন্য স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি ব্যবহার করা প্রয়োজন।
৬. তাজমহলের ভিত নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক মানের সমীক্ষা চালাতে হবে।
৭. তাজমহলে পর্যটকদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রতিদিনের জন্য পর্যটকের সংখ্যা নির্দিষ্ট ও সীমিত করতে হবে।  
 
টিকবে তাজমহল?
তাজমহল ও এখানে ঘুরতে আসা পর্যটকদের ওপর নির্ভর করে আগ্রার স্থানীয় অর্থনীতিও। তাজমহলের জন্যই শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ও তাজের আশপাশে গড়ে উঠেছে নানা হোটেল, দোকান, শপিং মল ইত্যাদি। হাজার হাজার মানুষ এই পর্যটনকেন্দ্রিক অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত। তাই তাজমহল না টিকলে আগ্রার মানুষের জন্য তা হবে সবচেয়ে বড় দুঃসংবাদ।
১৬৫২ সালে নির্মাণের মাত্র চার বছর পরই তাজমহলের সংস্কার করতে হয়েছিল মুঘল শাসকদের। পরে মুঘলদের দোর্দণ্ড প্রতাপ যত ম্রিয়মাণ হলো, ততই বিবর্ণ হলো তাজ। নাদির শাহের সেনা, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বেনিয়া, ব্রিটিশ শাসন—সব আমলেই তাজমহলের বিভিন্ন সম্পদ লুণ্ঠন করা হয়। শুরুতে তাজমহলের দরজা ছিল রুপার, ছিল সোনার তৈরি রেলিং, রত্নখচিত ঝাড়বাতি ও মহামূল্যবান কার্পেট—সবই গেছে ভিনদেশি শাসকদের হাতে। রয়ে গেছে শুধু তাজমহলের অপরূপ স্থাপত্য। এবার সেটিও ধ্বংস হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ১২টি প্রজন্ম ধরে টিকে আছে তাজমহল। কিন্তু আগামী ১২ প্রজন্ম এটি টিকে থাকবে কি? সময়েই মিলবে উত্তর।