নজরুল ইসলাম, বোদা, (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি :যারা চোর, বাটপার, চাঁদাবাজ ও হুমকিদাতা বাংলাদেশের প্রত্যেক জেলা উপজেলা ইউনিয়ন ওয়ার্ডে তাদের পিতামাতার নাম ও ঠিকানাসহ তালিকা ঝুলিয়ে দেয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। শুক্রবার সন্ধ্যায় পঞ্চগড় সরকারি অডিটোরিয়ামে বিচার সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সংবিধানের দাবিতে রাজনৈতিক কর্মশালা ও সমন্বয় সভায় এ কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশের অনেক রাজনৈতিক দলে দেখি বড় বড় নেতা ভালো ভালো কথা বলেন। কিন্তু তারা এখন অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে ব্যস্ত, কেউ রাতের আঁধারে ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলনে ব্যস্ত, কেউ চাঁদা নিতে ব্যস্ত, কেউ মিথ্যে মামলা দিয়ে মামলা বাণিজ্য করতে ব্যস্ত। আগামীর বাংলাদেশে আর কাউকে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা হয়ে উঠতে দেয়া হবে না। পঞ্চগড় জেলা ছাত্রদল স্কুলগুলোতে ছাত্রদলের কমিটি দেয়া শুরু করেছে। যেই সাহস শেখ হাসিনা ও ছাত্রলীগ করতে পারেনি সেই সাহস চব্বিশ পরবর্তী বাংলাদেশে ছাত্রদল করছে। এই বাংলাদেশের কোন স্কুল কলেজে ছাত্র রাজনীতির নামে লেজুরবৃত্তি রাজনীতি চলবে না। স্কুল কলেজগুলোতে আহ্বায়ক কমিটির নামে আওয়ামীলীগের মতো বিএনপির অযোগ্য লোকজন সভাপতি হয়ে পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করছে। তেঁতুলিয়া উপজেলার প্রথম সারির বিএনপির নেতারা কোথায় কোথায় চাঁদা নেন সব খবর আমাদের কাছে আছে। এ সময় সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দলেন নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। একই সাথে আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে পঞ্চগড়ের জেলা ও পৌরসভাগুলোতে এনসিপির কমিটি গঠন করা হবে বলেও জানান তিনি।
আমাদের সামনে এখন ডু অর ডাই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার। শুক্রবার সন্ধ্যায় পঞ্চগড় সরকারি অডিটোরিয়ামে বিচার সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সংবিধানের দাবিতে রাজনৈতিক কর্মশালা ও সমন্বয় সভায় এ কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, পরিস্থিতি এখন এমন হয় আমরা থাকবো আর না হয় গণহত্যাকারী ও তাদের লোকজন থাকবে। এই আওয়ামীলীগকে ফিরিয়ে আনার জন্য কত কিছু করা হচ্ছে। আমাদের কথা খুব পরিষ্কার যারা বাংলাদেশ বিরোধী রাজনৈতিক দল যেমন আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টি তারা বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর থেকেই আমরা বলে গেছি বাহাত্তরের সংবিধান আর চলবে না। এই সংবিধান এখন মরহুম সংবিধান। আমাদেরকে এখন নতুন সংবিধান বানাতে হবে। আওয়ামীলীগ এই সংবিধান জনগণের উপর চাপিয়ে দিয়েছিল। ওই সংবিধানে এক ব্যক্তিকে এবং একটি দলকে সকল ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। বাহাত্তরের সংবিধানের সবচেয়ে বড় ভিকটিম ছিলো বিএনপি। কিন্তু তারা এখন এই সংবিধানের মহাপ্রেমি হয়ে গেছে।
সংস্কারের নাম নেই কিন্তু আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য এই সরকার গাড়ি কিনে ফেলেছে। এই সংস্কার না হলে বাংলাদেশে আরও একটি গণঅভ্যুত্থান হবে। যে আমলা ও পুলিশ দিয়ে অবৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় ছিলো তাদের কিন্তু বিচার হয় নি। তারা মনের দিক থেকে আওয়ামীলীগের কাছাকাছি পাচ্ছে বিএনপিকে। যারা সারা দেশে তুমুল লুটপাট করছে। তাই সংস্কার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
বিএনপিকে ক্ষমতায় আনার জন্য বাংলাদেশে নির্বাচন হবে না। এখন নির্বাচনের নামে যে আয়োজন হচ্ছে তা একটা দলকে ক্ষমতায় আনার জন্য। আমরা ইউনুস সাহেবকে বলতে চাই এটাই যদি আপনার মনে থাকে তাহলে ভোট দিয়ে টাকা অপচয় না করে এমনিই ঘোষণা দিয়ে দেন। ইউনুসসহ এই সরকারের অবস্থা এখন ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি। কোন রকমে একটা কিছু দিয়ে চলে যেতে চাচ্ছে। ভিপি নুরের উপর যেভাবে হামলা হয়েছে কোন স্বাধীন দেশে এভাবে কাউকে মারা হয় না। আমরা যদি এর প্রতিবাদ না করি তাহলে আমাদের উপরেও এই হামলা হবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিচার করতে হবে। তাহলে এটি হবে ইতিহাস। পাশাপাশি ভোট বানচালের রাজনীতি সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে পঞ্চগড়ের এনসিপি ও জাতীয় যুব শক্তির নেতারা কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।