ইব্রাহীম মিঞা, বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্যাথলজি বিভাগে সেবা গ্রহণকারী রোগীর সংখ্যা অনেক কম। দুদকের অভিযানে জানাযায় মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ২ জনেরই রয়েছে ডায়াগনস্টিক সেন্টার। ভর্তিকৃত রোগীদের খাবার তালিকা অনুযায়ী মুরগির মাংসের জায়গায় রান্না করা হয়েছে নির্ধারিত পরিমাপের চেয়ে কম পরিমাপের মাছ।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জুড়ে রয়েছে দালালদের দৌরাত্ম। এমন সব তথ্য বেরিয়ে আসে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর অভিযানে।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০ টার সময় বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বিভিন্ন বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযানে আসে দিনাজপুর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দিনাজপুর জেলার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর সহকারী পরিচালক খায়রুল বাশার এর নেতৃত্বে অভিযানে উপস্থিত ছিলেন দিনাজপুর জেলার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর সহকারী পরিচালক ইসমাইল হোসেন ও উপ সহকারী পরিচালক কামরুন্নাহার সরকার, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মাইদুল ইসলাম।
প্রাথমিক পর্যায়ে তাঁরা সিভিলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন বিষয়ের উপর নজরদারি রাখেন। এসময় ঔষধ কোম্পানীর একজন রিপ্রেজেন্টেটিভ ও একজনকে রোগীদের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে দেখে দালাল সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরবর্তীতে প্রকাশ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্যাথলজি বিভাগ, এক্সরে বিভাগ, খাবারের মান ও খাবারের মেনু অনুযায়ী খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে কিনা, পুরুষ ওয়ার্ড, মহিলা ওয়ার্ড সহ স্টোর রুমে অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযানে প্রত্যেকটি বিভাগে দূর্নীতি ও অনিয়মের সত্যতা পান। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্যাথলজি বিভাগের ২ জনের একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট শাহ্ আল এমরান এর বাবার নামে রাজু ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও অপর একজন ল্যাব টেকনোলজিস্ট ইয়াসিন আলী এর স্ত্রীর নামে নাজমা ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে বলে নিশ্চিত হন।মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ল্যাব টেকনোলজিস্ট পদে চাকরিরত অবস্থায় ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সাথে সম্পৃক্ততা থাকার বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষেকে তাঁদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কিনা এবিষয়ে অবগত করতে বলেন।খাবার সরবরাহের ব্যবস্থায় দূর্নীতি ও অনিয়ম পেয়েছেন। আজকে মুরগির মাংস এর জায়গায় কম পরিমাণে মাছ ও কম পরিমাণে মোটা চালের ভাত রান্না করা হয়েছে। এবিষয়ে কর্তৃপক্ষকে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও সুপার ভাইজারকে শোকজ করতে বলা হয়েছে বলে জানান দিনাজপুর জেলার দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক খায়রুল বাশার। এছাড়াও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্টোররুম আপডেট না থাকায় বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ২ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্টের ২ জনেরই ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে এবং তাঁদের বদলি না করে নিজ এলাকায় কর্মরত রয়েছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে দিনাজপুর জেলার দূর্নীতি দমন কমিশন এর সহকারী পরিচালক ইসমাইল হোসেন ও খায়রুল বাশার বলেন, বর্তমান কর্মস্থল থেকে তাঁদের বদলি করা হলে তাঁরা এ ব্যাবসায়ী কার্যক্রম (ডায়াগনস্টিক সেন্টার) চালাতে পারবেনা ও তাঁদের যে সিন্ডিকেট রয়েছে সেটা ভাঙবে, এছাড়াও তাঁদের বদলির ব্যাপারে আমাদের সুপারিশ থাকবে। পরবর্তীতে তাঁদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন আমরা তা দেখবো।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরুষ ওয়ার্ডে অভিযান পরিচালনার সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের উদ্দেশ্য করে দিনাজপুর দুর্নীতি দমন কমিশন এর সহকারী পরিচালক ইসমাইল হোসেন বলেন, পরবর্তীতে এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর উপর আমাদের গোয়েন্দা নজরদারি থাকবে ।