Type Here to Get Search Results !

৫৬ বছর পর চিলাহাটি রেল স্টেশনে ভারতীয় ইঞ্জিন

আপেল বসুনীয়া,চিলাহাটি ওয়েব : দীর্ঘ ৫৫ বছর বন্ধ হয়ে যাওয়া চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথ আগামী ১ আগষ্ট থেকে নিয়মিত চালু হচ্ছে। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধের সময় এটি বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ৫৬ বছর পর গত ১৭ ডিসেম্বর চিলাহাটি রেলষ্টেশন থেকে ভারতের হলদিবাড়ি মালবাহী রেলগাড়ী যাওয়ার পর করোনা কালিন সময়ের জন্য সীমান্তে রেলপথের গেট বন্ধ রাখা হয়।
চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথটিকে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যোগাযোগ এবং ব্যবসা-বান্ধব রেলপথের মুল কেন্দ্র হিসাবে বিবেচনা করায় আজ ২৯ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুরে ভারতীয় ট্রায়াল ইঞ্জিল চিলাহাটি ষ্টেশনে আসে। 
ট্রায়াল রানের নেতৃত্বে ছিলেন ভারতের উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের এসআর গুডস্ গার্ড নির্মল গোরামি, নরদ পোদ্দার, বিনোদ কুমার, মুকেশ কুমার সিং, এলপি বিবেকানন্দ চৌধুরী, মনোজিৎ পাল চৌধুরী, রাবিশ পাটেল, রাকেশ কুমার, এএলপি অরিজিৎ রায়, ঋতু রাজ, অর্ক দাস ও গৌরভ কুমার।
এ সময় ভারতীয় উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের দুটি ইঞ্জিনের সঙ্গে আসেন ট্রেন পরিচালক ও ইঞ্জিন চালক। তাদের ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করে নেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার প্রকৌশলী নাজমুল হক রকি, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে সৈয়দপুর অফিসের প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম, নীলফামারীর ডোমার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজার রহমান, চিলাহাটি রেলস্টেশন মাস্টার আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ।
ভারতীয় প্রতিনিধিরা জানান, আগামী ১ আগস্ট থেকে এই পথে দুটি পণ্যবাহী ট্রেন চালু হচ্ছে। শুরুতে পণ্যবাহী ট্রেনে ভারত থেকে পাথর ও গম আসবে। এমনকি এ পথে অক্সিজেনবাহী ট্রেনও চলাচল করতে পারে।
এর আগে ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশের চিলাহাটি থেকে ভারতের হলদিবাড়ি পর্যন্ত পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করা হয়। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেছিলেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী যথাক্রমে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি।
চলতি বছর বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী এবং বাংলাদেশ-ভারত কূটনেতিক সম্পর্কের ৫০ বছর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকায় আসেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ওই সময় ২৭ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং নরেন্দ্র মোদি যৌথভাবে ঢাকা থেকে নিউজলপাইগুড়ি পর্যন্ত আন্তঃদেশীয় যাত্রীবাহী ‘মিতালী এক্সপ্রেস’ ট্রেনের উদ্বোধন করেন। যাত্রীবাহী ট্রেনটি উদ্বোধন করা হলেও করোনা পরিস্থিতি যাত্রীবাহী ট্রেনের চাকা আপাতত থামিয়ে রেখেছে।
সূত্র মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত-বাংলাদেশের বিভিন্ন রেল সীমান্ত দিয়ে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করছে। সে ক্ষেত্রে এবার চিলাহাটি-হলদিবাড়ি সীমান্ত রুটে বাধা নেই পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলে। ৬৫ বছর পর ফের হুইসেল বাজিয়ে ১ আগস্ট ৩০ ওয়াগন পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে আসবে ভারতীয় ট্রেন। তার আগে বৃহস্পতিবার দুই ইঞ্জিন নিয়ে নিউজলপাইগুড়ি ও হলদিবাড়ি থেকে বাংলাদেশের নীলফামারীর চিলাহাটি পর্যন্ত লার্নিং রান সম্পন্ন করা হলো।
সূত্র আরও বলছে, ইতোমধ্যে দুই দেশের পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের ক্লিয়ারেন্স দেয়া হয়েছে। ১ আগস্ট গম ও পাথর নিয়ে ৩০ বগির পণ্য ট্রেন বাংলাদেশে আসবে। যার গন্তব্য হবে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম তীর পর্যন্ত। সৈয়দপুর পার্বতীপুরও পণ্য নামতে পারে। ভারতীয় ইঞ্জিন চিলাহাটি পর্যন্ত এসে থেকে যাবে। চিলাহাটি থেকে বাংলাদেশের ইঞ্জিন নিয়ে যাবে নির্দিষ্ট গন্তব্যে। পণ্য খালাস শেষে ফের এসে ওয়াগন নিয়ে যাবে ভারতীয় ইঞ্জিন।
অন্যদিকে উভয় দেশের তরফে যাত্রী ট্রেন চলাচলের সব ব্যবস্থাই ঠিকঠাক রয়েছে। রয়েছে যাত্রী চালানোর গ্রিন সিগন্যাল। করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে তা থেমে রয়েছে।
যাত্রীবাহী ট্রেন চালু হলে বাংলাদেশের ভ্রমণপিপাসু মানুষের ঢল নামতে পারে ভারতের উত্তরের জনপদ দার্জিলিংসহ অন্যান্য দর্শনীয় স্থানে। বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর বিপুলসংখ্যক মানুষ দার্জিলিং ভ্রমণ করেন। তাদের যেতে হয় অনেক পথ ঘুরে এবং ব্যয়ও হয় বেশি।
চিলাহাটি-হলদিবাড়ি পথে রেল সচল হলে পণ্যবাহী কোনো ট্রেন বাংলাদেশে আসতে ১৫০ কিলোমিটার পথ সাশ্রয় হবে। সেক্ষেত্রে মাত্র ৬০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতেই বাংলাদেশে আসা সম্ভব হবে।

Top Post Ad

Hollywood Movies