আকাশ রহমান,বদরগঞ্জ প্রতিনিধি,চিলাহাটি ওয়েব : রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার নাগেরহাট এলাকার পাথর ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে এসিয়ান মহাসড়কের উপর অতিরিক্ত পাথর লোড়ের অভিযোগ উঠেছে। অসাধু পাথর ব্যবসায়ী মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনি প্রকল্পের অদুরে সড়কের উপর পাথরের হাট বসিয়ে জমজমাট ব্যবসা করায় প্রতিনিয়ত যানজটসহ ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। সেইসাথে সড়কের দুই ধারে ফাটল ধরে হাজার কোটি টাকার সম্পদ এই মহাসড়কটি চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগে জানা যায়, দিনাজপুরের মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনি প্রকল্পের অভ্যান্তর থেকে প্রতিদিন পাথর ব্যবসায়ীরা শতশত ট্রাক পাথর নিয়ে যান দেশের বিভিন্ন জেলায়। পাথর খনি থেকে দেশের যে কোন প্রান্তে বড় ট্রাক ১৮টন এবং ছোট ট্রাক ১৫টন পাথর পরিবহনের সরকারী অনুমতি না থাকলেও অসাধু পাথর ব্যবসায়ীরা দীর্ঘ পথের যাতায়াত খরচ পুষিয়ে নিতে খনির বহিরা বিভাগ থেকে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নি¤œমানের অতিরিক্ত পাথর ক্রয় করে তা ট্রাক যোগে নিয়ে যাচ্ছে নিজনিজ গন্তব্যে। আর এসব পাথর লোড করা হচ্ছে মহাসড়কের উপর। মহাসড়কে বড় ট্রাকে ৩৬টন এবং ছোট ট্রাকে ২২টন পাথর লোড করে পরিবহন করার ফলে ফুলবাড়ী-মিঠাপুকুর এসিয়ান মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ছোট বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। অল্প কিছু দিনের মধ্যে হাজার কোটি টাকায় নির্মিত এই মহাসড়কটি চলাচলে অনুপযোগী হওয়ার আশংকা করছে সচেতন মহল। এব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী জানান, মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনি কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত পাথর লোড়ের অনুমতি না দেওয়ায় খনির আশেপাশের অসাধু পাথর ব্যবসায়ীরা খনির অদুরে নাগেরহাট এবং শালবাগান এলাকায় মহাসড়কের উপর পাথরের হাট বসিয়ে সেখান থেকে অতিরিক্ত পাথর লোড করে আসছে। এলাকাবাসীরা আরো জানান, বদরগঞ্জ উপজেলার নাগেরহাট সোনারপাড়া গ্রামের সাদেক আলীর ছেলে বিপ্লব মিয়া প্রশাসনের নাকের ডগায় পাথরের হাট বসিয়ে জমজমাট ব্যবসা করছেন। তিনি বাহির থেকে পাথর কিনতে আসা ট্রাক চালকের সাথে যোগাযোগ করে নিয়মের বাইরে ট্রাকে অতিরিক্ত পাথর লোড দিয়ে প্রতিদিন সে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। অন্যদিকে সড়কের উপর পাথর লোড করায় যানজট ও দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে পথচারীসহ সাধারণ মানুষ। সম্প্রতিকালে, সড়কের উপর পাথর লোডের কারণে সোনারপাড়া গ্রামের সিরাজুল মিয়ার ছেলে সোহাগ মিয়া (২০) সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিল। অথচ, পাথর ব্যবসায়ী বিপ্লব মিয়া ভুক্তভোগীর পাশে এসে দাঁড়াননি।
এবিষয়ে অভিযুক্ত পাথর ব্যবসায়ী বিপ্লব মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি এই প্রতিবেদকের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আমি মাঝে মধ্যে ৫-৬ ট্রাক পাথর লোড কওে থাকি। এতে করে আমার কোন দোষ হলে আমি পাথরের ব্যবসা বন্ধ কওে দিব। কিন্তু তিনি ব্যবসা বন্ধের ব্যাপারে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিজ্ঞা করে আসলেও অদ্যবধি পাথরের ব্যবসা বন্ধ করেননি। বদরগঞ্জ থানার ওসি আনিছুর রহমান কয়েক দফা বলেছিলেন বিষয়টি সিরিয়াসলি দেখা হবে। কিন্তু মাসের পর মাস অতিবাহিত হলেও থানা পুলিশ বিষয়টি সম্পর্কে মোটেও গুরুত্ব দেননি। রংপুর জেলা ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই), ফাহামী এই প্রতিবেদককে বলেন, সড়ক-মহাসড়ক হচ্ছে দেশের সম্পদ, তাই আমরা এই সম্পদ রক্ষার জন্য সার্বক্ষণ সক্রিয় ভুমিকা পালন করব। কেহ যদি এই সম্পদ নষ্ট করতে চায় তাহলে আমরা অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করতে সদা প্রস্তুত। সেখানে খুব শীঘ্রই অভিযান পরিচালনা করা হবে।